জ্ঞ্যান ও বিনয়ের মিশেলে যে মোহনীয় মুখশ্রী তৈরী হয় , তা দর্শনে অন্তরের শেষ প্রান্তে মুগ্ধতার এক ঝিরি ঝর্না বয়ে যায় ,আমি সেই অনিন্দ মুখের অনুবাদ করার ক্ষীণ চেষ্টা করেছিলাম গত স্ট্যাটাসে, স্বল্প শব্দের অল্প কথায় । স্বজন সুজন বহুজন তাঁদের ভালোলাগার টিপসহি আর প্রাণবন্ত মন্তব্য দিয়ে উৎসাহের খেয়ায় ভাসিয়ে আমাকে বেঁধেছেন কৃতজ্ঞতার অদৃশ্য নাইলন গিঁটে । এই নাদান তাঁদের ভালোবাসার স্নেহ-শ্রদ্ধামূলে নতজানু ।
এই লেখাটি একটি উপন্যাসের আকার নিতে পারতো , গল্পের বরফ ফোটায় ফোটায় গলিয়ে পরিমান মতো নিমক গুর ঝাল টক এর সমবায়ে একটা নতুন স্বাদ দেয়া যেতো , তবু ঐ পথে যাবো না আমি । ও পথ আমার নয় ।
ফে-সদস্য হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত নর নারী নির্বিশেষে যতো বন্ধু পেয়েছি তাদের কাছ থেকে পাওয়া অনিন্দ আনন্দময় ভালোবাসার বিশ্বাসী পাটাতনে বুকের বোতাম খোলা সময়, নিদাঘ দাহে বিনয়ের সুশীতল ছায়া-প্রশ্রয়ে ক্লান্তি বিয়োগের স্বস্তি , ঘৃনার ধারালো শব্দ ছুরির নিঠুর আঘাত , কৌশলী আন্তরিকতায় কাব্যিক প্রতারনার চান্দ্রিক রুপোশ্রী, পাওয়া না পাওয়ার ঝাঁঝালো ফোঁড়ন , সযত্নে অযত্ন করন , অহংকারের ঘন স্বভাবে দুঃখ বিলাশ আর গীবতের বহুমাত্রিক রাগ সঙ্গীতে বুঁদ হয়ে অন্যের একাউন্ট হ্যাকের যাচ্ছে-তাই মানসিকতার দুর্গন্ধময় কদর্য মুখের নিপুণ স্কেচ আঁকার এক ধারাবাহিক চেস্টা থাকবে আমার এই লেখায় , তবে সঠিক কোন নামে নয় , ফেবু-আইডি , ঠিকানা বা ছবি ব্যাবহার করে নয় । এ লেখায় সকলেই নিরাপদ ।
পতিতা বৃত্তি ও প্রতারনার ডিজিটাল কৌশল !
মেয়েটাকে আমি ধন্যবাদ জানিয়ে তার সুস্বাস্থ কামনা করার পরে এই ম্যাসেজটা পেলাম ! কোথায় যাচ্ছে দেশ কোথায় যাচ্ছি আমরা !
Angel Reeya
Amar sathy real and skype sex korty cila ans deba. Ami thaki danmondi 27. Ami amar nejar flat a sex kori and basy aka thaki. Sex korty cila 1 den agy taka bkash a advance korty hoby for bokking. R ami bkash korar agy phone a 1 sec o kotha boli na. R amar kacy kokono sexy pic r kotha bolar jonno phone num caba na tila ami sathy sathy block koira debo. R ojatha hi hlo ki koro kamon aso aisob ajira pacel parba na. So bkash korar kotha boly bkash num neya taka bkash na koira call dely ami reciv korbo na. Sudu besas koira ja amaky kotha bolar agy bkash korty parby ami tar sathy sex kori. Amar kotha gula porar por amaky fack mony hoby tokon r dari na kori plz unfrnd koira debo. R jodi besas hoy or jodi resk neya agy bkash korty paro tila sudu ans deba ami raji.
জ্ঞ্যানের সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হচ্ছে বিনয় । বিনয় মিশ্রিত জ্ঞ্যান প্রকৃতির মতো মোলায়েম এবং সুন্দর । এই সুন্দর , স্বর্গীয় দ্যুতি ছড়ায় আষাঢ়ের মায়াবি জ্যোৎস্নার মতো ।
বিনয় বিহীন জ্ঞ্যান হুতোমের মুখশ্রী মনে করিয়ে দেয় বারবার । এই জ্ঞ্যান, অন্ধকারের কাকতাড়ুয়ার অদ্ভুত অপেক্ষার মতো হাস্যকর । এর সাথে যদি ছিটে ফোটা অহংকারের গুড়ো থাকে তাহলে সোলকলা পুর্ন ।
এই জ্ঞ্যানের হাওয়া বাতাস গায়ে মেখেই আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হচ্ছে ফ্রেমে বাঁধা হাস্যোজ্বল মুখোচ্ছবি নিয়ে ।
কি অদ্ভুত এই দেশ ! অদ্ভুতেরও অধিক অদ্ভুত এই দেশের মানুষের আচরণ ।
নুন্যতম যোগ্যতার সর্বোচ্চ প্রচারের ঢাক-ঢোল পিটিয়ে যত্রতত্র যায়গা করে
নেয়ার ইঁদুর দৌড়ে ব্যাতি ব্যস্ত করে রাখে লোকালয় । অন্যকে বিরক্ত করে হলেও
নিজের ঝান্ডা উরিয়ে রাখতে হবে ! এরা যোগ্যোতার স্বীকৃতি আদায়ে ভার্চুয়াল
সন্ত্রাসে নিষ্ঠুর ! এদের সমালোচনা করা যাবে না , শুধু পছন্দের টিপসই দিয়ে
যেতে হবে ! নয়তো শব্দধোলাই শুরু । এ ধোলাই শুরু হবে একা , পড়ে যোগ হবে
তোষামোদি তেলাপোকা দল !
একবার ও কেউ ভাবছি না , শান্তির ছাউনি থেকে ক্রমে ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছি !
দূরে সরে যাচ্ছি ! দূরে সরে যাচ্ছি !
আমি কখনও যেভাবে বিষয়টা ভাবিনি কিন্তু বাস্তবতা অনুভব করেছি মাত্র। আপনারাও শুনলে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারেন। কবি সাদাফ হাসনাইন মঞ্জু'র একটি কথাকে কবি ও ছড়াকার নাসের মাহমুদও সাদরে মেনে নিলেন, আমি তো নিলামই। যে হারে অকবিদের ভিড়ে কবি চেনা দায় হয়ে পরছে আজকাল সে কারণে জন্মনিয়ন্ত্রণের কনডম কিম্বা পিল আবিষ্কারের মত কবি নিয়ন্ত্রণেরও উপায় বের করা জরুরি। শুনতে মন্দ হলেও, কাজের কথা।
কবি নিয়ন্ত্রণের বিষয় নয় কিন্তু কবি প্রকাশের বিষয়। সুতরাং কবি বিনে অকবিদের কবি বলে সম্বোধন এবং তাদের কবিতা প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে। অসাধু প্রকাশক এবং ঘুষখোড় সামাজিক সংগঠন যারা টাকার বিনিময়ে পদক দেয় সে সকলকে চিহ্নিত করে সমাজ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। অনুজদের সেই সকল অগ্রজদের সাথে মিশতে হবে যারা প্রকৃতই নির্মোহ কবি এবং সাহিত্যের সাধক।
আমি মনে করি পেশা যাই হোক না কেন.....সৎ পেশা সততই মহান। কারও সৃষ্টিশীল কর্মকান্ডের সাথে অহেতুকভাবে মহৎ পেশার অশুচি খোঁজা দুর্বলচিত্তের নামান্তর। বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া দরকার। ‘মজা’ রেস্তরাঁ একটি ঐতিহ্যবাহী খাদ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। শুধু রাজধানি নয়...দেশের আনাচে-কানাচে থেকেও আমার যেসব বন্ধুরা এর স্বাদ পেয়েছেন...তারাও শুধু ‘মজা’-এর স্বাদ উপভোগ করতে রাজধানির বাইরে থেকে পরিবার টেনে এনেছেন...এমনকি ওপার বাংলার বেশ কিছু অতিথির সাথে আমার পরিচয় হয়েছে এই ‘মজা’ রেস্তরাঁর টেবিলে....আমার অভিজ্ঞতামতে অথবা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এই অধুনা রুচিসম্মত রেস্তরাঁ শুধুমাত্র রসনা বিলাসীদের জন্যই নয়....সৃজনশীল বা সৃষ্টিশীল ‘মানুষ’-গণের মিলনমেলা। যে রেস্তরাঁর পরিবেশ-পরিচ্ছন্নতার সাথে এই ঢাকা শহরে অন্য কোনও রেস্তরাঁর পরিবেশগত তুলনা অর্বাচিন সময়ক্ষেপন বলেই আমার ধারনা। আর একটা কথা না বললেই নয়.....আমার দর্শণ থেকে বলছি..একমাত্র ‘মজা’ রেস্তরাঁতেই স্কুল-কলেজ-ভার্সটি পড়ুয়া আমাদের কোমলমতি মেধাবী কন্যারা অভিভাবকের অবর্তমানে কখনও নিজেদের একাকী ভাবে না। নিজেরা আসে...রসনার স্বাদ বয়ে নিজেরাই চলে যায়...স্বস্তির আয়েসে। সে যাক....‘মজা’-এর কর্ণধার কিংবা ব্যক্তি Sadaf Hasnaeen Manzoor -এর সাথে আমার পরিচয় ‘মজা’-এর বিলাসি খাবারের মেনু থেকে নয়....একজন সৃষ্টিশীল কবি, অভিনেতা ও প্রকৃত সমাজসেবী হিসেবে। ঘনিষ্ঠতার প্রায় বছরখানেক পর (যদিও ‘মজা’ রেস্তরাঁ সম্পরকে জানতাম আরও পাঁচ বছর আগে থেকে) কাকতালীয়ভাবে জানতে পারি এই ‘মজা’-এর স্থপতি আমার বছরখানেক ধরে চেনা জানা বিশ্বস্ত বন্ধুটি। এত ঘনিষ্ঠতার মাঝেও তিনি কখনও ঐতিহ্যবাহী মজা সম্পরকে কখনও আগ বাড়িয়ে কিছু বলেননি। অকস্মাৎ একদিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় একটা পারিবারিক আয়োজন থেকে ফেরার সময় ফোনে কথা হলে তিনি আমার সান্নিধ্য উপভোগের জন্য ‘মজা’য় আমন্ত্রণ জানান এবং তখনই জানতে পারি এই ‘মজা’-এর গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠাতা আমার এই ঘনিষ্ঠজন। ‘মজা’-এর জন্য আমি যতটুকু গর্ব অনুভব করি, তার চেয়েও বেশি ধন্য মনে করি——একজন প্রকৃত কবি বন্ধু——Sadaf Hasnaeen Manzoor-এর বন্ধু হতে পেরে............
কাক ও ময়ূরপূচ্ছ।
-----------------
ফেসবুকে অপরচিত যাদের সাথে আমার দেখা হয়েছে পরবর্তিতে তাদের মধ্যে প্রথম Sadaf Hasnaeen Manzoor ভাই। দেখা হওয়ার আগে ফোনে কথা হয়েছে কয়েকবার। তাতেই খুব ভালো লেগেছে মুহুর্তে আপন করে নেবার ক্ষমতা তার অসাধারণ ! কয়েকবার ঢাকায় তার সাথে দেখা হয়েছে। প্রতিবারই ফিরে একটা করে স্ট্যাটাস দিয়েছি তাকে উদ্দেশ্য করে কিন্তু তার নাম না দিয়ে পাছে কষ্ট পান। তার সাথে প্রথম দেখার গল্প করি। ২০১৪ র আগষ্ট মাস ঢাকার আগারগাও এল জি ই ডি ভবনে কনফারেন্স। আগে জেনেছিলেন মাঞ্জুর ভাই। সকাল থেকে ফোন দিচ্ছিলেন কখন ফ্রি হবো? দুপুর দুটায় লাঞ্চ করে ১২ তলা থেকে যখন নামলাম তখন মুষল ধারে বৃষ্টি । গেটে দড়িয়ে ভেসপা নিয়ে ভিজছেন মাঞ্জুর ভাই। বৃষ্টিতে সি এন জি ওয়ালাদের পশ্চাৎদেশ ভারী হয় তারা যেতে চায় না। মাঞ্জুর ভাই ঐ বৃষ্টি তে একটা সি এন জি নিয়ে এসে বললেন উঠেন। আমি উঠলাম আর তিনি ভিজতে ভিজতে সামনে পথা দেখালেন। আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম আমি একজন অতি সাধারন মানুষ আমার জন্য এই লোকটা এতো কষ্ট করছেন কেনো?তারপর তার মজা রেস্টুরেন্টে গেলাম। ভাড়াটাও তিনিই দিলেন জোর করে। ভাড়া বাসায় থাকেন রেস্টুরেন্টের পাশেই। এর মধ্যে আমার আর ও কয়েকজন ফেসবুক বন্ধু ও প্রিয় মানুষ Rashel Mahmud, Adil Ananta, Mahbub Lovelu কে খবর দিলেন। চললো জম্পেশ আড্ডা আর অসাধারণ সব খাবার রেস্টুরেন্টের বাইরে বসে। মাঞ্জুর ভাইকে দেখলাম এলাকায় অসম্ভব জনপ্রিয়। যেই যাচ্ছে শ্রেণী ভেদে তাদের সাথে কথা রসিকতা করছেন। আমি ঐ দিনই ফিরবো তাই রাতে গাড়ীতে খাওয়ার জন্য এলুমিনিয়াম ফয়েলে খাবার পানি দিয়ে তার ভেসপায় করে কল্যানপুর দিয়ে এলেন। এরপর কয়েকবার ঢাকায় কাজে গিয়ে তার ওখানে গেছি মানে তিনি একরকম জোর করে নিয়ে গিয়েছেন। সব শেষ গিয়েছিলাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিন বিকেলে। সেদিন আর ও কিছু নতুন মুখ ছিলো, Jesmin Akter, Zakia Sisir নুরুল্লাহ মাসুম এবং Md Humayun Kabir , আড্ডা হলো দারুন সেইসাথে অসাধারণ সব খাবার বিনে পয়সায়। সবাই খেয়ে দেয়ে বিদেয় হলাম। জনাব হুমায়ুন কবির জানলাম কবি ও অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। পরে তিনি আমার বন্ধু হলেন এবং এখনো আছেন। আজ মাঞ্জুর ভাইয়ে একটা স্ট্যাটাস দেখলাম যাতে তিনি একটি স্ট্যাটাসের স্ক্রিন শট দিয়েছেন যেটা জনাব হুমায়ুন কবিরের যাতে মাঞ্জুর ভাইকে উদ্দেশ্য করেই নাকি লেখা অবশ্য তার নাই উল্লেখ নাই। তাতে লেখা রেস্টুরেন্টের প্রসার বাড়ানোর জন্যই কবিদের আড্ডা বসানো আর নিজে বাবুর্চি থেকে কবি সাজার চেষ্টা। দারুন! আবাক আমি! মাঞ্জুর ভাই আর তার পরিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরের আদি লোক। প্রচুর জমি জিরাত। যখন সেখানে ধান চাষ হতো। তার ভাইদের ছয় সাত তলা বহু ফ্লাট আছে আর মাঞ্জুর ভাই সেসব ছেড়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। লন্ডনে হোটেল ছেড়ে দিয়ে কোনোরকমে বেচে থাকার জন্য মজা রেস্টুরেন্ট করেছেন পার্টনারশীপে । তার মজা রেস্টুরেন্ট আসলেই এক্সট্রা অর্ডিনারি। সব কাসার বাসন, প্রত্যেক ঘরের আলাদা আলাদা নাম। একজন খেয়ে গেলে ডেটল দিয়ে টেবিল পরিস্কার। তার দোকানের জন্য আড দিতে হয় না। আমি দেখেছি চুলায় রান্না কিন্তু লোক টেবিলে বসে আছে। জিজ্ঞেস করলে বলে, এখন না বসলে খাবার পাবো না, শেষ হয়ে যাবে। আর হোটেল দেওয়ার আগে থেকেই মাঞ্জুর ভাই কবিতা গান লেখেন। আমার জানামতে তার কবিতা আর গানের যে সংগ্রহ আছে তাতে গোটা পচিশেক বই বের করা যাবে। আমি কবিতা ভালো লিখতে পারি না কিন্তু বুঝি। মাঞ্জুর ভাইয়ের কবিতায় যে গভীরতা আছে অনেক প্রতিষ্ঠিত কবির কবিতায় তা দেখিনি। একজন নিরহংকার, সদালাপী পরোপকারী মানুষ সম্পর্কে এ ধরনের মন্তব্য শুধু কষ্ট দায়কই নয় হাস্যকরও বটে । অবশ্য জনাব হুমায়ুন কবির মহোদয়কে ধন্যবাদ যে তিনি ইতোমধ্যে ট্যাটাসটি মুছে দিয়েছেন। মাঞ্জুর ভাইতো ময়ূর সাজতে যান নাই। তার ময়ূর সাজারও দরকার নাই। তিনি তো কাকই , সাচ্চা কাক। আমাদের কাকের রাজ্যে তিনিই কাকরাজ।
ভাইরাস নরকীট- ১১
ভাইরাস নরকীট সনাক্ত করে শাস্তি প্রদান ছাড়া সমাজকে সুস্থ রাখার বিকল্প
সাহিত্য সমাজে আগত এক দুষিত ভাইরাস নরকীট সম্পর্কে লিখতে গিয়ে মনে হল অনেকেই হয়তো ভাববে এসব মানুষকে জানানোর কি হল; নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিলেই তো হল। কিন্তু একজন মানুষ, কি পুরুষ কি নারী সত্যি যদি সমাজ সচেতন ও বিবেকবান সামাজিক জীব হয়ে থাকে তবে অবশ্যই সমাজের নরকীট সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করার দায়ভার নিজ কাঁধে তুলে নিতে প্রস্তুত থাকবে। শুধু তাই নয় আজ এই নরকীটের মাধ্যমে একটি বন্ধু মহল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আগামীতে যে আপনি বা আপনার কোন বন্ধুবলয় ক্ষতির শিকার হবেন না তার কি নিশ্চয়তা? সেই দায়ভার থেকে বর্তমান সাহিত্যসমাজ সহ অন্যান্য সকলকে চিনিয়ে দিতে চাই একটি নরকীটকে। সেই সাথে দাবি জানাই নরকীটের প্রকৃত শাস্তির জন্য তাদের কাছে- যারা সুশীল সমাজ, মা বোন কন্যা তথা নারীর সম্মান এবং সাহিত্য সেবক- লেখক ও কবিদের আত্মমর্যাদা রক্ষা করতে সদা প্রস্তুত। সেই লক্ষ্যে একটি দীর্ঘ লেখার অবতারনা করে আমি নূরিতা নূসরাত খন্দকার আরও অনেকের পক্ষ থেকে ন্যায্য প্রতিবাদ জানাতে চাই। তাই এটি কোন ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে লেখ্য বস্তু নয়। এটাকে সমাজে কিছু সম্মানিত ব্যক্তি নারী ও কবি সাহিত্যিক সম্পর্কে মানহানীকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সমাজবার্তা ও অন্যায়কারীর পরিচয় বার্তা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সম্মানিত পাঠককূলের প্রতি বিনীত অনুরোধ থাকবে। কারণ আমরা লেখক সমাজ মানেই আমাদের দেশের সাহিত্য ও শিল্প- সাংস্কৃতিক জগতকে কলুষমুক্ত রাখতে সদা অতন্ত্রপ্রহরী, নির্ভীক সেনা।
পুরুষের প্রতি নারীর কিম্বা নারীর প্রতি পুরুষের আকর্ষণ থাকবে সেটাই প্রাণী এবং মানব জগতের স্বাভাবিকতা। সেই দুর্বলতা চরিতার্থ করতে কেউ কেউ একাধিক নারী বা পুরুষের সাথে মানসিক ও শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত থাকে। সেটা স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক যাই হোক না কেন কোন অন্যায় বলে গণ্য হবে না যতক্ষণ ব্যক্তিস্বাধীনতা অতিক্রম করে মানুষ কোনো ভারসাম্যহীন আচরণ প্রকাশ করে। ভারসাম্যহীন আচরণ বলতে অশ্রদ্ধা, গীবত, মানুষের প্রতি মানুষের মূল্যবোধ অবক্ষয় এবং নিজের চরিত্রকে ভাল বলতে গিয়ে অন্যের চরিত্রের ওপর মিথ্যা অভিযোগে কলঙ্কিত করে তোলা। শুধু তাই নয়, অত্যাধুনিক যুগের যাবতীয় সুবিধায় এক বা একাধিক মানুষের ছবি বিকৃত করে চরিত্রের ওপর অযাচিত কলঙ্ক লেপটে দেয়া সত্যি গর্হিত অন্যায়। এই জাতীয় ভণ্ড ও প্রতারকের পাল্লায় পরে দৈনিক অসংখ্য মানুষের সাজানো ঘর-সংসার ভেঙ্গে যায়। অধিকাংশ ভণ্ড প্রতারক থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ক্ষতিগ্রস্ত যদি নারী হয়ে থাকে তবে তারা হয় সমাজে কুগল্পের খোঁড়াক। এমনকি নারীরাও ভণ্ডদের কথা ভুলে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের নিয়েই বাজে মন্তব্যে লিপ্ত থাকে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্তের কি ঘর কি সমাজ কি কর্মক্ষেত্র সকল যায়গাতেই অভাবনীয় মানসিক সঙ্কটে ভুগতে থাকে। অথচ তার একটিই মাত্র ছোট্ট ভুল তা হল- বন্ধু নির্বাচন ভুল। মানুষ চেনা একটা কঠিন কাজ। মূলত মানুষের দেহ অবয়ব চেনা ছাড়া মানুষের মন চেনা অসম্ভব। যেখানে মানুষ নিজেই আজ তার মন বস্তুকে আবিস্কার করতে পারেনি। একজন সাধারণ মানুষকে যদিও বা কিছু কথা কিছু আচরণ দিয়ে কিছুদিনের ওঠা বসায় মানুষটির ধরণ আন্দাজ করা যায়। কিন্তু মুখোশ ধারী একজন প্রতারকের ধরণ চেনা যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ বিষয়। আর যদি হয় যথেষ্ট বয়স্ক এবং সমাজের সম্মানিত কোন উচ্চ পদস্থ চাকুরীজীবী তবে তার ক্ষেত্রে তো আগে চোখের সামনে সম্মানের আস্তরণ ঝুলে থাকে। সন্দেহের চোখ তখনি ফোটে শুরু যখন ব্যক্তি নিজে কিছু ভুল করে বসেন একাধিক জনের সাথে একটি বন্ধু সমন্বয় দলের সাথে।তেমনি বন্ধুতে বন্ধুতে কথার আদান প্রদানে অনেকের ঝুলি থেকে বেড়িয়ে আসে কদর্য এক কবি বেশ ধারী। সাহিাত্য সমাজ কলুষিত করা ভাইরাস নরকীট- মুখোশধারী চরিত্রহীন মিথ্যুকের কাহিনী। শুধু তাই নয় সাইবার ক্রাইমার হিসেবেও নিজেকে জঘন্য অপরাধী হিসেবে মেলে ধরেছেন। কারণ ইতিমধ্যেই সে একাধিক মানুষকে জানিয়েছেন তিনি নারীদের ন্যুড ছবির সংগ্রাহক। কোন নারী তার কু’ইশারায় সাড়া না দিলেই সে নারী হয়ে যায় চরিত্রহীন, ন্যুড ছবির শিকার।
তিনি কবি- কারণ তার কবিতার বই আছে। তিনি কারো স্বামী, কারো বাবা, কারো শ্বশুর, কারো নানা। তিনি ষাটোর্ধ পুরুষ। তিনি যে কবি তা প্রমাণেরও নানান কায়দা আছে। তার জ্ঞানী দৃষ্টিতে বড় বড় অসংখ্য লেখকরা হলেন নারীখোর আর লুচ্চা। এমনকি যে ম্যাজিক লণ্ঠন তাকে সম্মান দিয়ে আড্ডার কবি হিসেবে ডেকে কবি সমাজে পরিচয় করে দিয়েছিল সেই ম্যাজিক লণ্ঠন এবং কর্ণধারকে নিয়েও তার কটূক্তির সীমা নেই। কিন্তু কেন তার কটূক্তি? প্রশ্ন করলে উত্তরে তিনি বলেন, তিনি একজন সম্মানিত কবি তার মুখের কথাই যথেষ্ট, কোন ব্যাখ্যার প্রয়োজন লাগে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় পাশ করা ছাত্র। সুতরাং তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত কবি।
প্রথমতঃ তার পকেটে ক্যামেরা থাকে। সাহিত্যের ভুবন ডিঙ্গানো কিছু সরল মানুষের বাড়িতে যাবে কারো না কারো ছুতো ধরে। ফেসবুকের দেয়ালে ঝুলিয়ে বিশ্ববাসীকে দেখাবে তিনি অমুকের বাসায় আজ তমুকের বাসায় কাল, সেই অনুষ্ঠানে, ওই মঞ্চে ইত্যাদি।
দ্বিতীয়তঃ পরিচয় মাত্রই জানবেন তিনি ইয়া বড় লম্বা চওড়া চাক্ ছিলেন। তার আলিশান ফ্লাট আছে। মূলত বরিশালে তার পূর্ব পুরুষ ছিল জমিদার। সামাজিক কোমর বেশ শক্ত পোক্ত। কারণ তার ছোট ভাই সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।
তৃতীয়তঃ কথা শুরু হওয়া মাত্রই আপনি যদি অবিবাহিত/ বিবাহিত/ ডিভোর্সি/ স্বামী বিদেশে ইত্যাদি যে কোন প্রকারের (নারী) হয়ে থাকেন তবে আপনার মোবাইল নম্বর এবং ফেসবুক আইডি চেয়ে নেবে। চতুর্থতঃ আপনাকে আধুনিক আধুনিক গ্রন্থের নাম সহ চিন্তা প্রকাশ করে আপনাকে তাক লাগিয়ে দেবে। পঞ্চমতঃ ইনবক্সে আপনাকে কবিতার সুরে সুরে মিষ্টি ঝাল নুন বাংলা সাহিত্যের মহারথী হিসেবে জাহির করবে; ফোনালাপেও আপনাকে বুঝিয়ে দেবে কত বড় বড় সাহিত্যিক নিয়ে তার ওঠা বসা। মোদ্দা কথা তিনি খুব বড় মাপের কেউ।
তারপর যা যা ঘটবে বা ঘটবেঃ
আপনাকে বাসায় নিমন্ত্রণ করবে চা খেতে। গর্বের সাথে জানাবে আরও কিছু মহারথীরা তার বাড়িতে আসবে। কিন্তু আপনিই প্রধান এবং বিশেষ অতিথি। পরিপাটি গোছালো পরিবারের সাথে পরিচয় করাবেন। এরপর আন্তরিকতার বহর বেড়ে ওঠা মাত্রই গোপনে গোপনে আপনার (নারী) আশেপাশে লেপটে থাকা যাবতীয় বন্ধুমহলে আপনার চরিত্র সম্পর্কে আজে বাজে বানোয়াট কথা ছড়াতে থাকবে। এমনকি আপনি যে কত খারাপ তা প্রমাণ করতে যেহেতু তার পকেটে মোবাইল থাকে আপনার যে কোন ছবি পর্ণগ্রাফির আদলে পেশ করে আপনার পরিচিতদের মাঝে বিতরণ করে দেখাবে। এ সবই ঘটনে আপনার অগোচরে। আপনার দৃঢ় বিশ্বাস থাকবে তার মত নীতিবান মানুষ এবং আপনার সবচেয়ে শুভাকাঙ্ক্ষী তিনি ছাড়া দ্বিতীয়টি আপনার আশে পাশে কেউ নেই।
দুর্ভাগ্য বশতঃ এই নরকীটের সাথে পরম শ্রদ্ধেয় অগ্রজ কবি, ঔপন্যাসিক, কলামিস্ট বুহুগুণে গুণান্বিত সাযযাদ কাদির এবং আমার পরিচয় হয়েছিল ম্যাজিক লণ্ঠন সাপ্তাহিক কবিতা আড্ডায়। সেখানে উপস্থিত সবাই জানতে পারি তিনি সত্তর দশকের আলোকিত ও আলোড়িত কবি শ্রদ্ধেয় জাহাঙ্গীর ফিরোজ এঁর একজন দীর্ঘকালের বন্ধু সুবাদে ম্যাজিক লণ্ঠন আড্ডার সভাকবি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। পারিচিতি পর্বে আরও জানতে পারি তিনি বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিব ছিলেন। রিটায়ার্ড করার পর ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে আছেন বর্তমানে। পরবর্তীতে গল্প প্রসঙ্গে জানতে পারি তিনি কোন এক সময়ে বান্দরবনের জেলা প্রশাসকও ছিলেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধার দৃষ্টি আরোপিত হয়েছিল বয়স এবং কর্মকাহিনীর পরিচয় সুত্র ধরেই।
এর কিছুদিন পর প্রেসক্লাবে কবিতাপত্রের মাসিক আড্ডায় আমাকে শ্রদ্ধেয় সাযযাদ কাদির নিমন্ত্রণ জানালে সম্মান করে তাকেও সাথে নিয়ে যাই (কারণ ইতিপূর্বে তিনিই জানিয়েছিলেন এমন কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক)। সেখানে ছবি তোলা সহ কবির সাংবাদিক ও কবি শ্রেণির একাধিক নারীর নাম্বার এবং ফেসবুক আইডি সংগ্রহ করেন। পরের মাসে যখন তাকে নিয়ে আবার প্রেসক্লাবে যাই তখন তিনি আমাকে জানান, সে অল্পবয়সী নারীকবি তার প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে অস্থির, তিনি তাকে আর সামলাতে পারছেনা। আমি খুব অবাক হয়ে তাকে প্রশ্ন করেছিলাম- “তার সাথে তো গতমাসেই পরিচয় মাত্র। ওই মেয়ের এত কথা জানলেন কি করে? তাছাড়া একটা মেয়ে এত দ্রুত তার মনের কথা বলে দিতে পারে নাকি”! তার উত্তর যা ছিল, ফোনে প্রতিদিন সব শেয়ার করেছে। কিন্তু তিনি সে মেয়েকে মোটেও লাইক করেন না। কারণ সে মেধাহীন। তিনি আবার মেধাহীন নারীদের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারেন না। অথচ প্রেসক্লাবে পৌঁছানোর পর দেখেছিলাম তাজরিনের সাথে ছবি তুলতে আর নানান ইশারার কথায় তার চেয়ে ব্যাস্ত আর কেউ নয়। সৌভাগ্যবশতঃ (আমার এই কথার প্রমাণ সাপেক্ষে) সেদিন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, লেখক, কলামিস্ট এবং কবি শামসুল আলম বেলাল সাহেবও উপস্থিত ছিলেন। আমি অনেক আগে থেকেই তাজরিনকে মেধাবী পরিচয়ে চিনতাম বলেই আমার আর তাজরিনের সাথে আলাদা করে জেনে নেওয়ার জন্য কথা বলার প্রয়োজন মনে হয়নি। বরং ভদ্রলোকের সাথে তাজরিনের মেধার পরিচয় ঘটুক সে প্রত্যাশায় তাকে বলেছিলাম, “সময় সব বলে দেবে। অল্প পরিচয়ে মেধা চেনা যায় না”। তিনি উত্তরে যা জানালেন, দীর্ঘদিন প্রশাসনের মত জটিল জায়গা তিনি সামলিয়েছেন সুতরাং তার কাছে মানুষ চেনা কোন বিষয়ই নয়। তখন নিজেকে বড় বোকাই মনে হয়েছিল আমার। কারণ একজন প্রাক্তন সচিবকে সময়ের উদাহরণ দেয়ার কোন দরকার ছিল না। স্বভাব হেতু আমি কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলিনা এবং শোনারও অবকাশ রাখিনা বলেই ওসব কথা আর শুনতেও চাইলাম না।
সেদিন উম্মুল খায়ের নামে আরও একজন কবিকে ফোনে প্রেসক্লাবে ডেকেছিলেন আমাকে না জানিয়েই। আমাকে না জানানোর কথা এই কারণেই বললাম কারণ আমি সেদিন অবাক হয়েছিলাম তার কাণ্ডজ্ঞান দেখে। একটি নির্ধারিত বলয়ে তিনি আমার মাধ্যমে পরিচিত হয়েছেন অথচ তিনি আমাকেই না জানিয়ে নিমন্ত্রণ করেছেন অন্য কাউকে সেই আচরণগত নমুনা দেখে আমি কিছুটা বিস্মিতই হয়েছিলাম। কিন্তু শ্রদ্ধার নজর আগে থেকেই নিমজ্জিত ছিল বিধায় আর সে বিষয়ে কোন কথা বাড়াইনি। কবি উম্মুলের সাথেও ছবি তুলতে মহাব্যস্ত ছিল এই ষাটোর্ধ বয়সী কবি। পরে উম্মুল খায়ের আমাকে দেখে মনে করিয়ে দিলেন ২০১৪ সালে বিশ্ব কবিতা উৎসবে কবি সাদিক মোহম্মদ এঁর মাধ্যমে তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। আমারও মনে পরে গেল সব। উম্মুল খায়ের কবি সাদিক মোহম্মদের প্রসঙ্গ টানতেই ষাটোর্ধ কবি অপ্রত্যাশিতভাবে গর্জে বললেন, ‘সাদিক সেই স্টুপিড বয়। সে তো একটা স্টুপিড ছেলে। ইডিয়ট। কিসের কবি?' বিস্ময়ে আমি তাকে পাল্টা প্রশ্ন করি “আপনি তাকে কেন স্টুপিড বয় বললেন? কারণ কি? সাদিক সিনিয়র হলেও আমাদের বন্ধু সার্কেলের একজন ভাল বন্ধু। আপনি তাকে কতদিন ধরে চেনেন?” কিন্তু তিনি কোন কারণ ব্যাখ্যা দিতে প্রস্তুত নন। সাফ জানিয়ে দিলেন। আমি দ্বিতীয়বার বিরক্ত সুরে জানতে চাইলে তিনি আবারও গর্জানো সুরে বললেন, “ওকে সামনে পেলে আমি থাপ্পড় দিয়ে তারপর বলব ও কেন স্টুপিড। ওকে আগে সামনে পাইয়া নেই তারপর জানবেন ও কেন স্টুপিড”। যাই হোক সেদিন এই জাতীয় কথা শুনে খুব বিব্রত এবং বিরক্ত হয়েছিলাম বেশ। সেখানে প্রবীণ সাংবাদিক সহ সম্পাদক গোছের মানুষেরা থাকায় পারিপার্শ্বিক কারণে সাদিক প্রসংগ ইচ্ছে করে স্থগিত রাখলাম। কিন্তু মনের ভেতর প্রচন্ড বিষ ঢেউ বয়ে গেল সেটাও ঠিক। সাদিক মোহম্মদের মত একজন শান্ত ও কাব্য নিবিষ্ট কবি সম্পর্কে প্রেসক্লাবের বুকে দাঁড়িয়ে এই কথা বলার কি কারণ থাকতে পারে সেটা জানার জন্য আমার ভেতর বহুবার আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু প্রশ্ন জিজ্ঞেস মাত্রই তিনি উত্তর না দিয়ে দু’দফা পরিবেশ অশান্ত করে তোলায় সেই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছিল পরিবেশ শান্ত রাখাটাও সামাজিক দায়। মনের ভেতরে অপেক্ষার বেলাভূমি গড়ে তুলেছিলাম।
আগেই জানিয়েছিলাম বলে ঐদিন আমি তাকে মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মহোদয়ের বাসার সাহিত্য ও সংগীত আড্ডায় নিয়ে যাই। সেখানে কবি শেলিনাজ সহ আমার প্রিয় অগ্রজ কবি বন্ধু, রেডটাইমস পত্রিকার সম্পাদক সৌমিত্রদেব এবং ময়মনসিংহ গীতিকা সংকলক ও গবেষক আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন এর প্রপৌত্রী অধ্যাপক-গবেষক শ্রদ্ধেয় দেবলীনা দিদির সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে। সে সব ছবি সহ তার ফেসবুকে পোস্টে ঢালাও প্রচারও করতে কার্পণ্য করে নাই তখন। এরপর 'এইবেলা' পত্রিকায় দেবলীনা দিদির ইন্টারভিউ উপলক্ষ্যে অংশগ্রহণ করে। আমাকে ছাড়া তিনি নিমন্ত্রণ পান নি বিধায় আমাকেও উপস্থিত থাকতে হয়েছিল।
আমি তার বাসায় যে ক'বার নিমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছিলাম তার মধ্যে প্রথম দিনঃ তিনি আমাকে সন্ধ্যা সাতটায় কৃষিমার্কেট এর কাছে মজা নামে একটি রেস্টুরেন্টে ডাকলেন। জানালেন, সেখানে কিছু কবি বন্ধুদের সাথে একটি নান্দনিক সাহিত্য আড্ডা চলছে। আমাকেও সেখানে যোগ দিতে ডাকলেন। আড্ডা শেষে তিনি তার বাসায় আমাকে নিয়ে যাবেন। আরও জানলাম তার স্ত্রীও আমার জন্য খাবার রান্না করে অপেক্ষায় আছেন। মজায় গিয়ে পরিচয় হল শারদীয়া সম্পাদক নূরুল্লাহ মাসুম, নাট্যকার ও কবি মাহবুব লাভলু, শিক্ষা অফিসার জেসমিন আক্তার, সংগঠক ও লেখক, কবি জাকিয়া শিশির, কবি ও সম্পাদক এবং মজা রেস্টুরেন্ট কর্ণধার সাদাফ হাসনাইন মাঞ্জু এবং শিক্ষা অফিসার (বিসিএস) চঞ্চল ভৌমিক প্রমুখের সাথে।
দ্বিতীয় দিনঃ কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন। মূলত তাঁর কথা বলায় আমি আর নিমন্ত্রণ ফেলতে পারিনি সেদিন। সত্তর দশকের সেই বিখ্যাত কবির কবিতা এবং আমার গান মিলে সুন্দর কিছু সামান্য কাটিয়েছিলাম।
তৃতীয়দিনঃ শ্রদ্ধেয় কবি দিলতাজ রহমান আপা এবং আলোচিত ব্যক্তির দু'জন বাল্যবন্ধু বেড়াতে এসেছিলেন। তাদের একজন (নাম মনে নেই) মাইটিভি'র উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। নরকীটের গুণী মেয়ের সাথে একটা সহজ রসিকতা (সম্ভবত আমার কথার আদল ভাল করে না শুনে) দিলতাজ আপা অভিভাবক সুলভ আমাকে নীতি কথা শুনিয়েছিলেন। যা সেই সময়ের অন্য আমার ভাল লাগেনি মোটেই। কিন্তু ভাল না লাগা কারো সাথেই প্রকাশ করিনি কারণ তিনি আমার বয়োজ্যেষ্ঠ এবং সম্মানিত নারী। আর না বলা ফাঁকফোকরে ঝোপ বুঝে কোপ মারার সুযোগ ছাড়েনি সেই নরকীট। আমাদের দুজনের অজান্তেই খেলেছে কুৎসা রটানোর খেলা। সেদিন আমাকে রাতে থাকতে বলেছিল নরকীট এবং তার সহধর্মিণী। সেদিন বলেছিলাম অন্য কোন দিন এসে আরও গান শোনাবো এবং থেকেও যাব।
চতুর্থ বা শেষদিনঃ রোজার ঈদের অগ্রিম নিমন্ত্রণ থাকায় ঈদের পরদিন নৈশ ভোজনে তার বাসায় যাই। ঘনবৃষ্টিময় রাতের আকাশ। রাস্তায় রিক্সা পাওয়া যাবে কি না এসব ভাবতে ভাবতে ঘরে ফেরার জন্য উদগ্রীব আমি। আমাকে বলেন, ‘বৃষ্টিতে এখন আর না যেয়ে আজ থেকেই যান। আমার বাসায় কোন অসুবিধা নেই। এক্সট্রা রুম পরেই তো আছে’। আমি অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তার স্ত্রীও বলেন, “নূরিতা আজ রাতে থেকে যাও তো। থাকলে সত্যি খুব খুশি হব। আকাশও খারাপ। আর এখন এমনিতেও বের হতে পারবে না”। আমি তাদের জানালাম আমার লেখা জমা দিতে হবে। বাসায় না ফিরলে লিখতে পারব না। আমাকে রাতের মধ্যেই লিখতে হবে”। নরকীট বলল তার ল্যাপটপ থাকতে চিন্তা কি। মূলত লেখার নিশ্চয়তা পেয়েই থেকে গেছিলাম সে রাতে। ভালই কেটেছিল। অনেক রাত পর্যন্ত তার স্ত্রী এবং দুই মেয়ে ও নাতির হাতে মেন্দি পরিয়ে দিয়েছিলাম। তার বড় মেয়ে বিজুয়া আমার হাতে যত্ন ভরে মেন্দির নকশা এঁকে দিল। মেন্দি উৎসবের পাশাপাশি সবাই মিলে রেডিও ভূমি’র প্রথম প্রয়াস শ্রুতি নাটক শুনেছিলাম। সে নাটকে তার ছোট মেয়ে নায়িকা চরিত্রে ছিল।
সেদিন নরকীটকে সাদিকের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তর্জন গর্জনে পুনশ্চ অস্থিরতা দেখা যায় তার চোখে মুখে। পারলে তখনি সাদিক তার সামনে দাঁড়ালেই সে তাকে জুতিয়ে কবিতা কি জিনিস তা শেখাত। আর তার মত উচ্চ পর্যায়ের কবির সাথে (অজ্ঞাত) বেয়াদবির জন্য সাদিকের বারোটা বাজিয়ে তেরোটা করে ছাড়ত। এসব গর্জনের হম্বিদম্ভি শুনে তার স্ত্রী স্বয়ং তাকে সহজ বাংলায় থামালেন, “তুমি ওসব কিছুই করতে পারবা না। ওইসব মুখেই তোমার শেষ। খামোখা অতিরিক্ত কথা বলার কি দরকার”। আমি সাথে যোগ করে বললাম, “শোনেন আপনি যখন কারো সম্পর্কে কোন নেগেটিভ কথা বলবেন বিশেষ করে প্রেসক্লাবের মত স্থানে তখন শ্রোতার কাছে প্রধান প্রশ্ন দাঁড়াবে মানুষটার কোন বিষয়ে আপনি ক্ষিপ্ত। কারণ ব্যাখ্যা ছাড়া আপনার কোন কথাই কথা নয়। একজন সম্পর্কে বলতে গেলে যুক্তি ও কারণ প্রথমে নির্দেশ করবেন। সেটা বলতে না পারলে অহেতুক আপনার কথা বলাই উচিত না”। আমার এই কথা শুনে সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলল, “আমি বলেছি সাদিক একটা স্টুপিড বেয়াদপ। ব্যাস সে তাই। আমার মুখের কথাই যথেষ্ট। আমি বাংলা সাব্জেক্ট এখনো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই। সাদিক কোন কবিই না। কি কবিতা লেখে আমার জানা আছে। সাদিককে আমি বাগ মত পাইলে ধরব তো। সে কি কবি হইছে সেইটা সবার সামনে তুলে ধরব। আমি ব্যাখ্যা কেন দিব আপনাকে”। আমার জানা ছিল না তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য পড়ান। আর ঘটনা কিছু না বলায় আন্দাজও করতে পারলাম না সাদিক সম্পর্কে কেন এইসব কথা তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলে বেড়ান। তবে প্রতিবাদ করেছিলাম সামান্য উত্তেজিত স্বরে কারণ তার একটা কথা ছিল ভীষণ আপত্তিকর। তা হল সাদিক কোন কবিই না- এই কথা শুনে আমি বিরক্তি ঝেরেছি আমার ভদ্রতা বজিয়ে। এরপরেই একে একে আবিষ্কার করতে থাকলাম সম্মানিত অনেক নারী ও পুরুষদের ব্যক্তিত্ব-চরিত্র নিয়ে মনগড়া মিথ্যে কথা এবং অসম্মানজনক কথা বলাই তার প্রধান কাজ। সেগুলো জানার পর কি শাস্তি হওয়া উচিত তা আপনারাই বিচার করুন।
প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখছি, বাস্তব জগতে স্বনাম ধন্য কবি যিনি একজন রত্নগর্ভা জননী, একজন সুপ্রতিষ্ঠিত গল্পসাহিত্যিক এবং কবি। তিনি মানুষের মঙ্গল ছাড়া অমঙ্গল করেন না- এইটুকু তথ্য আমার সুবিস্তৃত বন্ধুমহলের সুবাদে আগেই জেনেছিলাম। তবে আমি নিজে একদিন তাকে আরও অনেক উঁচু মহৎ আসনে দেখেছি, যেদিন গল্পকার ও কবি দিলতাজ রহমান আপা আমাকে স্নেহ-আদর ভরে (জাদুঘরে) কাব্যলোক পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য বুকে জড়িয়ে আশীর্বাদ করেন। এবং আমাকে খুব মিষ্টি করে বলেন, “নূরিতা তুমি আমার সাথে যোগাযোগ রেখো। দোয়া করি তুমি অনেক বড় হও”। সৌভাগ্য কাকে বলে আমি জানি না। তবে একজন অগ্রজ সাহিত্যিক যখন সবার সামনে বুকে জড়িয়ে স্নেহ আর ভালবাসা দিয়ে আশীর্বাদ করেন তখন তাতে সৌভাগ্যের চেয়েও অনেক বেশি কিছু মনে হয়। হৃদসত্য হল সেদিন মা মা গন্ধ পেয়েছিলাম গোপনে গোপনে। কারণ আমার সংগ্রামী আম্মু পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন অনেক আগেই। তাই হয়ত গোপন হৃদয় কোন প্রকৃত সংগ্রামী নারীর স্পর্শ পেলে মাতৃস্নেহ আকাঙ্ক্ষাকেই উস্কে দেয়। অথচ মা-সম এই মহান নারী সম্পর্কেও বাজে কথা নরকীট ছড়িয়ে বেড়ায়। শুধু তাই নয় তাঁর কাছেও আমার সম্পর্কে জঘন্যতম বানোয়াট কথা বলে আমার পরিচয় দিয়েছিল। কিন্তু সেগুলো আমাদের উভয়ের অগোচরে করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে দু’জনের কাছেই ধোয়া তুলসী থেকে যেতে পারনি আর।
কতটা জঘন্য এবং চরিত্রহীন হলে একটা মানুষ রাতে মেহমানকে থাকতে দিয়ে পরে রটিয়ে বেড়ায় মেহমান তার সাথে শারীরিক সম্পর্কের জন্য ছিল। এখানে আমার প্রশ্ন হলঃ সে নিজে তাহলে কেমন স্বামী বা বাবা যার স্ত্রী ও কন্যাদের উপস্থিতিতে হাঁটুর বয়সি মেহমানের সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার বানোয়াট গল্প রটিয়ে বেড়ায়? কি ধরণের মানুষ যে তার বৌয়ের নামেও কুৎসা রটিয়ে আরেকজন সম্মানিত নারীকে (সরকারি কর্মকর্তা) প্রেম নিবেদনের মোড়কে কু-প্রস্তাব দিয়ে অসম্মান করে? শুধু তাই নয় কিছু মেয়েদের যৌন উস্কানি দিতে আরও জঘন্য পন্থা অবলম্বন করে। ফটোশপে ছবি এডিট করে পর্ণ ছবিতে রূপান্তর করে। তারপর এক নারীর কাছে আরেক নারীর নগ্ন ছবি দেখিয়ে তার জনপ্রিয়তার বড়াই করে। এভাবে কি কবি হওয়া যায়? এমন কি মিথ্যে কুৎসা রটিয়ে মজা রেস্টুরেন্টের মালিক কবি এবং সাহিত্য পত্রিকার চর্যাপদ এর সহঃসম্পাদক সাদাফ হাসনাইন মাঞ্জু সম্পর্কে একটি পোস্ট দেয়। কারণ কবি সাদাফকেই প্রথম কয়েকজন নারী ষাটোর্ধ এই কবি সম্পর্কে অভিযোগ দেয়। আর সেটার আঁচ বুঝতে পেরেই সে কবি সাদাফ এর উপার্জন কেন্দ্র 'মজা' সহ কবিত্ব নিয়েও কটু কথা লিখে তার ফেসবুকপোস্টে দিলে আমি সরাসরি (কমেন্ট বক্সে) জানতে চাই একজন কবি সম্পর্কে সমালোচনা করতে গিয়ে তার সৎ পথের উপার্জনকে কেন আঘাত করা হল। আরও লিখি কবিত্বের দুর্বলতা আলোচনা করতে হলে কাব্যগ্রন্থ সহ কবিতার উদাহরণ দেয়া সমালোচকের অবশ্য কর্তব্য। নাট্যকার ও কবি মাহবুব লাভলু’র জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে কবি সাদাফকে দেখা মাত্র পরিবেশ দূষিত করে সেদিনই সবার চোখে সে একটা নরকীটে পরিণত হয়। তারচেয়েও জঘন্য কাজ করে সকলের শ্রদ্ধা বঞ্চিত হয়েছে সেদিনের আনন্দ-অনুষ্ঠানে। আয়োজকের (নারী) সরলতার সুযোগ নিয়ে তার অজান্তেই তাকে প্রেমিকা পরিচয় দিয়ে ফোন ধরিয়ে দিয়ে সুকৌশলে ব্যাবহার করে ফোনের ওপারে অপর এক নারীকে ঈর্ষান্বিত করার ফন্দী এঁটে হয়তো সফল হয়েছিল। কিন্তু রমনার সেই বিকেলে তার জঘন্য চেহারা আবিষ্কার করে সকলের হৃদয়ে ঘৃণার কালো ছায়ায় অন্ধকার দেখছিল। কারণ আয়োজক জেসমিন আক্তার সম্পর্কে যেমন কুৎসা অন্যের কাছে রটেছেন তেমনি জেসমিন আপার কাছেও অন্যান্য নারী সম্পর্কে আজেবাজে মন্তব্য ছড়িয়েছে। সেদিন যে তার ময়ূরপুচ্ছ পরা দাঁড়কাক চেহারা উন্মোচিত হয়েছিল সেটাও সে না জেনে নিজেরি ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন চর্যাপদ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক এবং মজা রেস্টুরেন্ট এর মালিক সম্পর্কে কদর্য কথা। আর তখনি পাল্টা পোস্ট মাঞ্জু ভাই সহ মাহবুব লাভলু এবং চঞ্চল ভৌমিক দিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি পোস্টে আমি সহ অনেকেই নরকীটের কদর্য পোস্টের তুমুল সমালোচনা করি।
সম্মানিত কবি লেখক ও সাহিত্যিক সকলের কাছে আমার প্রশ্ন- মাথামোটা এই গায়ে মানেনা আপনি মোড়লকে কি কবি সমাজে প্রবেশ করতে দেয়া আর মটেই উচিত হবে? সমাজের সকল নারীর কাছে আমার প্রশ্ন- যদি এই ষাটোর্ধ নোংরা ইতর পুরুষকে তার বউ-বাচ্চারা পাগল বা মানসিক রোগী বলে ক্ষমা প্রত্যাশা করে তবে কি নরকীটের সেই নতুন ভেক কে প্রশ্রয় দেয়া উচিত হবে। কারণ সে যে পাগল নয়, প্রকৃতই ভণ্ড। তার মাধ্যমে আরও অজস্র মা-বোনের ইজ্জত ডোবানোর সুযোগ করে দেয়া কি আমাদেরই অন্যায় হবে না? নারীর নগ্ন শরীরের ছবি ছড়ানো কি সাইবার ক্রাইম নয়? সমাজের খুঁটি তার ছোটভাই সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা- সে কথা ভেবে কি তার সাইবার অপরাধ অগণ্য, নির্বিচার থেকে যাবে? বয়সে অনুজ হলেও যত্র তত্র কবি সাদিক মোহম্মদ, কবি সাদাফ হাসনাইন মাঞ্জু কিম্বা আরও অন্যান্য সম্মানিত কবি ও নারী সম্পর্কে ব্যাখ্যাহীন ভাবে কুৎসা রটিয়ে মান হানীকর কথা বলার অধিকার তাকে কে দিয়েছে? সমাজে সম্মানিত নারী, লেখক ও সুপ্রতিষ্ঠিত কবিদের সাথে ছবি তুলে পরবর্তীতে তাদের সম্পর্কে কুৎসা রটানোর দুঃসাহস কোথায় পায় সে? আমরা চাই এর যথোপযুক্ত জবাব তাকে দিতেই হবে এবং জনসমক্ষে তাকে নিরপরাধ নারীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। সাইবার ক্রাইম অপরাধের আওতায় এনে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।
এই নরকীটেরা সমাজে বিচার বহির্ভূত থাকা মানে মানুষের সম্পর্কের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা, বিশ্বাস হারিয়ে ফেলা এবং যার ফলে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে নির্বাক মেনে নেয়া। একটি বিবেকবান সচেতন সমাজ কখনই তা ঘটতে দিতে পারে না। তার উপর আমাদের দেশ- বাংলাদেশ, একাত্তরের আলোকদীপ্ত চেতনায় জাতির প্রতারক রাজাকার নির্মূলকারী জাতি হিসেবে আজ আমরা সারা বিশ্বে সমাদৃত। স্বাধীন দেশের বুকে যারা সমাজকে সুশীল মুখোশে প্রতারণা ও ভণ্ডামি দিয়ে কলুষিত করছে তারাও এক প্রকারের রাজাকার। এদের জন্যেও শাস্তির বিধান আমাদের দেশে মজুত আছে।
তবুও এই জাতীয় অপরাধীরা যদি বিচার বহির্ভূত থাকে তবে আগামী সমাজও কলুষিত থাকবে। আর বারবার প্রতারিত হতে থাকবে সাহিত্য শিল্পাঙ্গনের বন্ধু সুলভ সুস্থ পরিবেশ। কবিদের প্রতি, লেখকদের প্রতি সর্বোপরি সৃষ্টিশীল মানুষদের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা হ্রাসের অবকাশ থেকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে এমন কি সৃজনশীল মানুষেরা নিজেরাও একে অপরের প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই অতি দ্রুত এই জাতীয় ভাইরাস নরকীটদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি বিধান করা ছাড়া সমাজকে সুস্থ রাখার বিকল্প নেই।
একবার ও কেউ ভাবছি না , শান্তির ছাউনি থেকে ক্রমে ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছি !
দূরে সরে যাচ্ছি ! দূরে সরে যাচ্ছি !
আমি কখনও যেভাবে বিষয়টা ভাবিনি কিন্তু বাস্তবতা অনুভব করেছি মাত্র। আপনারাও শুনলে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারেন। কবি সাদাফ হাসনাইন মঞ্জু'র একটি কথাকে কবি ও ছড়াকার নাসের মাহমুদও সাদরে মেনে নিলেন, আমি তো নিলামই। যে হারে অকবিদের ভিড়ে কবি চেনা দায় হয়ে পরছে আজকাল সে কারণে জন্মনিয়ন্ত্রণের কনডম কিম্বা পিল আবিষ্কারের মত কবি নিয়ন্ত্রণেরও উপায় বের করা জরুরি। শুনতে মন্দ হলেও, কাজের কথা।
কবি নিয়ন্ত্রণের বিষয় নয় কিন্তু কবি প্রকাশের বিষয়। সুতরাং কবি বিনে অকবিদের কবি বলে সম্বোধন এবং তাদের কবিতা প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে। অসাধু প্রকাশক এবং ঘুষখোড় সামাজিক সংগঠন যারা টাকার বিনিময়ে পদক দেয় সে সকলকে চিহ্নিত করে সমাজ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। অনুজদের সেই সকল অগ্রজদের সাথে মিশতে হবে যারা প্রকৃতই নির্মোহ কবি এবং সাহিত্যের সাধক।
আমার
শুভাকাংক্ষী শ্রদ্ধেয় বড় ভাই 'হুমায়ুন কবির' গতকাল নিচের এই স্ট্যাটাস টি
দিয়েছেন। তার আগে তিনি তার ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে আমাকে অত্যন্ত আন্তরিকতার
সাথে ঝেটে বিদায় করেছেন।
সুপ্রিয় হুমায়ুন ভাই অর্নব আশিক নাম নিয়ে লিখালিখি করেন। গত বইমেলায় চন্দ্রদ্বীপ প্রকাশনী থেকে "ধুপগন্ধময় জীবন" শিরোনামে একটি কবিতার বই বের হয়েছে ।
অনুজ হিসাবে তার জন্য আমার নিরন্তর প্রার্থনা, তার কাব্য ভুমি সোনালী ফসলে
সমৃদ্ধ হউক, আমিন ।
ভাষা সমৃদ্ধ ! তার স্ট্যাটাসটি আমাকে আমার সুহৃদগন স্ক্রীনসর্ট করে পাঠিয়েছেন । তারা
আমাকে কেনো পাঠিয়েছেন? তাদের কাছে মনে হয়েছে, আমার প্রিয় অগ্রজ আমাকে ইংগিত করে এই স্ট্যাটাসটি দিয়েছেন কাল ।
মনযোগ দিয়ে পড়ার পর বন্ধুদের ধারনা আমার বিশ্বাসে রুপ নেয় । কারন, আমার জানামতে, কবিতা চর্চা করেন এমন ব্যাক্তি দের মধ্যে একমাত্র আমি রেস্তোরাঁ বানিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত, এবং আমার ছবি সম্বলিত ক'একটি পোস্টার রেস্তোরাঁর দেয়ালে সাঁটানো আছে। রসুইঘরে রান্না করতে করতে দুই চার লাইন কবিতা লিখার অপচেস্টাও করি নিয়মিত । তবে হুমায়ুন ভাইজান যে ভাবে" দাঁড়কাকের ময়ুরপুচ্ছ" ধারনের গল্প বলতে গিয়ে আমার পবিত্র পেশাকে হেয় করার উল্লাসে মেতেছেন, তাতে করে আমি বিনয়ে নতজানু হয়ে আপনাকে জানাতে চাই সুপ্রিয় শ্রধ্যেয় হুমায়ুন ভাই কবিতাকে আমি বানিজ্যের বিজ্ঞাপন বোর্ড বানাইনি কখনো। এক কথার সত্যতা শতভাগ । এ দেশে আমার কারি বিজনেস এর গল্প মাত্র পাঁচ বছরের । দু'একটি টিভি চ্যানেল স্বেচ্ছায় নিজ দায়িত্বে এই রেস্তোরাঁর গল্প শুনিয়েছেন তাদের রংগিন পর্দায় । দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক পাঁচটা পত্রিকা ফিচার করেছেন। এরা প্রত্যেকেই ভোক্তা হিসাবে এসেছিলেন প্রথম।
খাবারেরর স্বাদ, মান,পরিচ্ছন্নতা, স্বচ্ছতায় তৃপ্ত হয়ে আমার অনুমতি নিয়ে ফিচার করেছেন। কোলকাতার অত্যন্ত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন "হ্যাংলা হেসেল" এখানে এসে আমার ইন্টারভিউ সহ ইলিশকাচ্চির রেসিপি নিয়ে তাদের টিভি চ্যানেলে ও পত্রিকায় প্রকাশ ও প্রচার করেছেন । আর এই সবই আপনার মতো অগ্রজদের দোয়াতেই
হয়েছে । পক্ষান্তরে আমি লেখালেখির উজান যাত্রায় গা ভাসিয়েছি একত্রিশ বছর আগে । উনিশ শত চুরাশি সাল থেকে আমি লিটল ম্যাগ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি । আমি ও আমার সহযোগী দের সংগে নিয়ে "চর্যাপদ"নামে একটি লিটল ম্যাগ প্রকাশ করে আসছি আজোব্দি । শুরুতে আমি তার সহকারী সম্পাদক ছিলাম এখন প্রকাশক । কবি আযাদ নোমান এখনো সম্পাদনার গুরু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কবিতাচর্চা নামে আরো একটি কবিতা পত্রিকা প্রকাশনার সাথে সরাসরি যুক্ত আছি, যার সম্পাদক কবি বদরুল হায়দার।
আল্লাহ সুবহানু তা আলার অশেষ মেহেরবানীতে আমি একজন
ইউ.কে ট্রেনিং প্রাপ্ত প্রফেশনাল বাবুর্চি । যুক্তরাজ্যে স্থায়ী আবাসের সকল সুবিধা
থাকা সত্যেও আমি দেশে ফিরেছি মা, মাটি,
ও কবিতার টানে। চল্লিশজন সহকর্মী
নিয়ে তিনবেলা ভাত বেচি দুইবেলা
ভাতের আশায় ।
ইদানিং আমি " অকবি ধোলাই প্রকল্প" ও "পইড়া দ্যাহেন, সাদাফের জ্ঞ্যান, হুদাই ঘ্যানপ্যান" নামে সিরিজ কবিতা লিখছি ।
যা অ-কবিদেরকে উদ্যেশ্য করে লিখছি ।
কাদেরকে আমি অ-কবি বলতে চাইছি ?
যারা কবিতা চর্চার চেয়ে কবি হাওয়ার ভান করে, অহর্নিশি কবির মুখোশ পড়ে ফিটফাট টিকসই শরীর নিয়ে নিরিহ নারি শীকারে ব্রত আছেন । যাদের কাছে, কন্যা, নাতিন সহ মাঝ বয়সি নারীরাও নিরাপদ নন। যারা নিজ স্ত্রীর গীবত খেয়ালে গোপন মঞ্চ কাপান পরস্ত্রীর অনুকম্পা প্রাপ্তির প্রত্যাশায় । ধারাবাহিক মিথ্যাচারের বিষ্ঠায় পরিবেশ দুষিত করার মহান দায়িত্ব পালনে নিরলস অগ্রণী, আমি তাদেরকে অ-কবি বলে মানি । আমার এই অ-কবি নিধনের প্রকল্প নিয়ে এ দেশের
কবিদের কোন মাথা ব্যাথা তৈরী হয়েছে বলে কোন সংবাদ আমার কাছে এখনো পৌছায়নি।
মহাত্নন,বিনয়াবনত আমি আপনার করকমলে নতজানু হয়ে জানতে চাই, আমার উপর আপনার এতো গোসসা কেনো ? একবার দয়া করে, স্নেহের সন্মুখে এসে চোখে চোখ রেখে বলে যান... তুই ঘুরে সো,তোর মুখে দুর্গন্ধ ! আপনার জন্য অধমের ভাংগা দুয়ার খোলা রইলো আগের মতোই । যারা এই গার্বেজটি এতোক্ষন কস্ট করে পড়লেন তাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
এই নাদানের প্রতি দয়াবান হউন
দোয়া রেখে ।
সুপ্রিয় হুমায়ুন ভাই অর্নব আশিক নাম নিয়ে লিখালিখি করেন। গত বইমেলায় চন্দ্রদ্বীপ প্রকাশনী থেকে "ধুপগন্ধময় জীবন" শিরোনামে একটি কবিতার বই বের হয়েছে ।
অনুজ হিসাবে তার জন্য আমার নিরন্তর প্রার্থনা, তার কাব্য ভুমি সোনালী ফসলে
সমৃদ্ধ হউক, আমিন ।
ভাষা সমৃদ্ধ ! তার স্ট্যাটাসটি আমাকে আমার সুহৃদগন স্ক্রীনসর্ট করে পাঠিয়েছেন । তারা
আমাকে কেনো পাঠিয়েছেন? তাদের কাছে মনে হয়েছে, আমার প্রিয় অগ্রজ আমাকে ইংগিত করে এই স্ট্যাটাসটি দিয়েছেন কাল ।
মনযোগ দিয়ে পড়ার পর বন্ধুদের ধারনা আমার বিশ্বাসে রুপ নেয় । কারন, আমার জানামতে, কবিতা চর্চা করেন এমন ব্যাক্তি দের মধ্যে একমাত্র আমি রেস্তোরাঁ বানিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত, এবং আমার ছবি সম্বলিত ক'একটি পোস্টার রেস্তোরাঁর দেয়ালে সাঁটানো আছে। রসুইঘরে রান্না করতে করতে দুই চার লাইন কবিতা লিখার অপচেস্টাও করি নিয়মিত । তবে হুমায়ুন ভাইজান যে ভাবে" দাঁড়কাকের ময়ুরপুচ্ছ" ধারনের গল্প বলতে গিয়ে আমার পবিত্র পেশাকে হেয় করার উল্লাসে মেতেছেন, তাতে করে আমি বিনয়ে নতজানু হয়ে আপনাকে জানাতে চাই সুপ্রিয় শ্রধ্যেয় হুমায়ুন ভাই কবিতাকে আমি বানিজ্যের বিজ্ঞাপন বোর্ড বানাইনি কখনো। এক কথার সত্যতা শতভাগ । এ দেশে আমার কারি বিজনেস এর গল্প মাত্র পাঁচ বছরের । দু'একটি টিভি চ্যানেল স্বেচ্ছায় নিজ দায়িত্বে এই রেস্তোরাঁর গল্প শুনিয়েছেন তাদের রংগিন পর্দায় । দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক পাঁচটা পত্রিকা ফিচার করেছেন। এরা প্রত্যেকেই ভোক্তা হিসাবে এসেছিলেন প্রথম।
খাবারেরর স্বাদ, মান,পরিচ্ছন্নতা, স্বচ্ছতায় তৃপ্ত হয়ে আমার অনুমতি নিয়ে ফিচার করেছেন। কোলকাতার অত্যন্ত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন "হ্যাংলা হেসেল" এখানে এসে আমার ইন্টারভিউ সহ ইলিশকাচ্চির রেসিপি নিয়ে তাদের টিভি চ্যানেলে ও পত্রিকায় প্রকাশ ও প্রচার করেছেন । আর এই সবই আপনার মতো অগ্রজদের দোয়াতেই
হয়েছে । পক্ষান্তরে আমি লেখালেখির উজান যাত্রায় গা ভাসিয়েছি একত্রিশ বছর আগে । উনিশ শত চুরাশি সাল থেকে আমি লিটল ম্যাগ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি । আমি ও আমার সহযোগী দের সংগে নিয়ে "চর্যাপদ"নামে একটি লিটল ম্যাগ প্রকাশ করে আসছি আজোব্দি । শুরুতে আমি তার সহকারী সম্পাদক ছিলাম এখন প্রকাশক । কবি আযাদ নোমান এখনো সম্পাদনার গুরু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কবিতাচর্চা নামে আরো একটি কবিতা পত্রিকা প্রকাশনার সাথে সরাসরি যুক্ত আছি, যার সম্পাদক কবি বদরুল হায়দার।
আল্লাহ সুবহানু তা আলার অশেষ মেহেরবানীতে আমি একজন
ইউ.কে ট্রেনিং প্রাপ্ত প্রফেশনাল বাবুর্চি । যুক্তরাজ্যে স্থায়ী আবাসের সকল সুবিধা
থাকা সত্যেও আমি দেশে ফিরেছি মা, মাটি,
ও কবিতার টানে। চল্লিশজন সহকর্মী
নিয়ে তিনবেলা ভাত বেচি দুইবেলা
ভাতের আশায় ।
ইদানিং আমি " অকবি ধোলাই প্রকল্প" ও "পইড়া দ্যাহেন, সাদাফের জ্ঞ্যান, হুদাই ঘ্যানপ্যান" নামে সিরিজ কবিতা লিখছি ।
যা অ-কবিদেরকে উদ্যেশ্য করে লিখছি ।
কাদেরকে আমি অ-কবি বলতে চাইছি ?
যারা কবিতা চর্চার চেয়ে কবি হাওয়ার ভান করে, অহর্নিশি কবির মুখোশ পড়ে ফিটফাট টিকসই শরীর নিয়ে নিরিহ নারি শীকারে ব্রত আছেন । যাদের কাছে, কন্যা, নাতিন সহ মাঝ বয়সি নারীরাও নিরাপদ নন। যারা নিজ স্ত্রীর গীবত খেয়ালে গোপন মঞ্চ কাপান পরস্ত্রীর অনুকম্পা প্রাপ্তির প্রত্যাশায় । ধারাবাহিক মিথ্যাচারের বিষ্ঠায় পরিবেশ দুষিত করার মহান দায়িত্ব পালনে নিরলস অগ্রণী, আমি তাদেরকে অ-কবি বলে মানি । আমার এই অ-কবি নিধনের প্রকল্প নিয়ে এ দেশের
কবিদের কোন মাথা ব্যাথা তৈরী হয়েছে বলে কোন সংবাদ আমার কাছে এখনো পৌছায়নি।
মহাত্নন,বিনয়াবনত আমি আপনার করকমলে নতজানু হয়ে জানতে চাই, আমার উপর আপনার এতো গোসসা কেনো ? একবার দয়া করে, স্নেহের সন্মুখে এসে চোখে চোখ রেখে বলে যান... তুই ঘুরে সো,তোর মুখে দুর্গন্ধ ! আপনার জন্য অধমের ভাংগা দুয়ার খোলা রইলো আগের মতোই । যারা এই গার্বেজটি এতোক্ষন কস্ট করে পড়লেন তাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
এই নাদানের প্রতি দয়াবান হউন
দোয়া রেখে ।
আমি মনে করি পেশা যাই হোক না কেন.....সৎ পেশা সততই মহান। কারও সৃষ্টিশীল কর্মকান্ডের সাথে অহেতুকভাবে মহৎ পেশার অশুচি খোঁজা দুর্বলচিত্তের নামান্তর। বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া দরকার। ‘মজা’ রেস্তরাঁ একটি ঐতিহ্যবাহী খাদ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। শুধু রাজধানি নয়...দেশের আনাচে-কানাচে থেকেও আমার যেসব বন্ধুরা এর স্বাদ পেয়েছেন...তারাও শুধু ‘মজা’-এর স্বাদ উপভোগ করতে রাজধানির বাইরে থেকে পরিবার টেনে এনেছেন...এমনকি ওপার বাংলার বেশ কিছু অতিথির সাথে আমার পরিচয় হয়েছে এই ‘মজা’ রেস্তরাঁর টেবিলে....আমার অভিজ্ঞতামতে অথবা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এই অধুনা রুচিসম্মত রেস্তরাঁ শুধুমাত্র রসনা বিলাসীদের জন্যই নয়....সৃজনশীল বা সৃষ্টিশীল ‘মানুষ’-গণের মিলনমেলা। যে রেস্তরাঁর পরিবেশ-পরিচ্ছন্নতার সাথে এই ঢাকা শহরে অন্য কোনও রেস্তরাঁর পরিবেশগত তুলনা অর্বাচিন সময়ক্ষেপন বলেই আমার ধারনা। আর একটা কথা না বললেই নয়.....আমার দর্শণ থেকে বলছি..একমাত্র ‘মজা’ রেস্তরাঁতেই স্কুল-কলেজ-ভার্সটি পড়ুয়া আমাদের কোমলমতি মেধাবী কন্যারা অভিভাবকের অবর্তমানে কখনও নিজেদের একাকী ভাবে না। নিজেরা আসে...রসনার স্বাদ বয়ে নিজেরাই চলে যায়...স্বস্তির আয়েসে। সে যাক....‘মজা’-এর কর্ণধার কিংবা ব্যক্তি Sadaf Hasnaeen Manzoor -এর সাথে আমার পরিচয় ‘মজা’-এর বিলাসি খাবারের মেনু থেকে নয়....একজন সৃষ্টিশীল কবি, অভিনেতা ও প্রকৃত সমাজসেবী হিসেবে। ঘনিষ্ঠতার প্রায় বছরখানেক পর (যদিও ‘মজা’ রেস্তরাঁ সম্পরকে জানতাম আরও পাঁচ বছর আগে থেকে) কাকতালীয়ভাবে জানতে পারি এই ‘মজা’-এর স্থপতি আমার বছরখানেক ধরে চেনা জানা বিশ্বস্ত বন্ধুটি। এত ঘনিষ্ঠতার মাঝেও তিনি কখনও ঐতিহ্যবাহী মজা সম্পরকে কখনও আগ বাড়িয়ে কিছু বলেননি। অকস্মাৎ একদিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় একটা পারিবারিক আয়োজন থেকে ফেরার সময় ফোনে কথা হলে তিনি আমার সান্নিধ্য উপভোগের জন্য ‘মজা’য় আমন্ত্রণ জানান এবং তখনই জানতে পারি এই ‘মজা’-এর গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠাতা আমার এই ঘনিষ্ঠজন। ‘মজা’-এর জন্য আমি যতটুকু গর্ব অনুভব করি, তার চেয়েও বেশি ধন্য মনে করি——একজন প্রকৃত কবি বন্ধু——Sadaf Hasnaeen Manzoor-এর বন্ধু হতে পেরে............
কাক ও ময়ূরপূচ্ছ।
-----------------
ফেসবুকে অপরচিত যাদের সাথে আমার দেখা হয়েছে পরবর্তিতে তাদের মধ্যে প্রথম Sadaf Hasnaeen Manzoor ভাই। দেখা হওয়ার আগে ফোনে কথা হয়েছে কয়েকবার। তাতেই খুব ভালো লেগেছে মুহুর্তে আপন করে নেবার ক্ষমতা তার অসাধারণ ! কয়েকবার ঢাকায় তার সাথে দেখা হয়েছে। প্রতিবারই ফিরে একটা করে স্ট্যাটাস দিয়েছি তাকে উদ্দেশ্য করে কিন্তু তার নাম না দিয়ে পাছে কষ্ট পান। তার সাথে প্রথম দেখার গল্প করি। ২০১৪ র আগষ্ট মাস ঢাকার আগারগাও এল জি ই ডি ভবনে কনফারেন্স। আগে জেনেছিলেন মাঞ্জুর ভাই। সকাল থেকে ফোন দিচ্ছিলেন কখন ফ্রি হবো? দুপুর দুটায় লাঞ্চ করে ১২ তলা থেকে যখন নামলাম তখন মুষল ধারে বৃষ্টি । গেটে দড়িয়ে ভেসপা নিয়ে ভিজছেন মাঞ্জুর ভাই। বৃষ্টিতে সি এন জি ওয়ালাদের পশ্চাৎদেশ ভারী হয় তারা যেতে চায় না। মাঞ্জুর ভাই ঐ বৃষ্টি তে একটা সি এন জি নিয়ে এসে বললেন উঠেন। আমি উঠলাম আর তিনি ভিজতে ভিজতে সামনে পথা দেখালেন। আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম আমি একজন অতি সাধারন মানুষ আমার জন্য এই লোকটা এতো কষ্ট করছেন কেনো?তারপর তার মজা রেস্টুরেন্টে গেলাম। ভাড়াটাও তিনিই দিলেন জোর করে। ভাড়া বাসায় থাকেন রেস্টুরেন্টের পাশেই। এর মধ্যে আমার আর ও কয়েকজন ফেসবুক বন্ধু ও প্রিয় মানুষ Rashel Mahmud, Adil Ananta, Mahbub Lovelu কে খবর দিলেন। চললো জম্পেশ আড্ডা আর অসাধারণ সব খাবার রেস্টুরেন্টের বাইরে বসে। মাঞ্জুর ভাইকে দেখলাম এলাকায় অসম্ভব জনপ্রিয়। যেই যাচ্ছে শ্রেণী ভেদে তাদের সাথে কথা রসিকতা করছেন। আমি ঐ দিনই ফিরবো তাই রাতে গাড়ীতে খাওয়ার জন্য এলুমিনিয়াম ফয়েলে খাবার পানি দিয়ে তার ভেসপায় করে কল্যানপুর দিয়ে এলেন। এরপর কয়েকবার ঢাকায় কাজে গিয়ে তার ওখানে গেছি মানে তিনি একরকম জোর করে নিয়ে গিয়েছেন। সব শেষ গিয়েছিলাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিন বিকেলে। সেদিন আর ও কিছু নতুন মুখ ছিলো, Jesmin Akter, Zakia Sisir নুরুল্লাহ মাসুম এবং Md Humayun Kabir , আড্ডা হলো দারুন সেইসাথে অসাধারণ সব খাবার বিনে পয়সায়। সবাই খেয়ে দেয়ে বিদেয় হলাম। জনাব হুমায়ুন কবির জানলাম কবি ও অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। পরে তিনি আমার বন্ধু হলেন এবং এখনো আছেন। আজ মাঞ্জুর ভাইয়ে একটা স্ট্যাটাস দেখলাম যাতে তিনি একটি স্ট্যাটাসের স্ক্রিন শট দিয়েছেন যেটা জনাব হুমায়ুন কবিরের যাতে মাঞ্জুর ভাইকে উদ্দেশ্য করেই নাকি লেখা অবশ্য তার নাই উল্লেখ নাই। তাতে লেখা রেস্টুরেন্টের প্রসার বাড়ানোর জন্যই কবিদের আড্ডা বসানো আর নিজে বাবুর্চি থেকে কবি সাজার চেষ্টা। দারুন! আবাক আমি! মাঞ্জুর ভাই আর তার পরিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরের আদি লোক। প্রচুর জমি জিরাত। যখন সেখানে ধান চাষ হতো। তার ভাইদের ছয় সাত তলা বহু ফ্লাট আছে আর মাঞ্জুর ভাই সেসব ছেড়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। লন্ডনে হোটেল ছেড়ে দিয়ে কোনোরকমে বেচে থাকার জন্য মজা রেস্টুরেন্ট করেছেন পার্টনারশীপে । তার মজা রেস্টুরেন্ট আসলেই এক্সট্রা অর্ডিনারি। সব কাসার বাসন, প্রত্যেক ঘরের আলাদা আলাদা নাম। একজন খেয়ে গেলে ডেটল দিয়ে টেবিল পরিস্কার। তার দোকানের জন্য আড দিতে হয় না। আমি দেখেছি চুলায় রান্না কিন্তু লোক টেবিলে বসে আছে। জিজ্ঞেস করলে বলে, এখন না বসলে খাবার পাবো না, শেষ হয়ে যাবে। আর হোটেল দেওয়ার আগে থেকেই মাঞ্জুর ভাই কবিতা গান লেখেন। আমার জানামতে তার কবিতা আর গানের যে সংগ্রহ আছে তাতে গোটা পচিশেক বই বের করা যাবে। আমি কবিতা ভালো লিখতে পারি না কিন্তু বুঝি। মাঞ্জুর ভাইয়ের কবিতায় যে গভীরতা আছে অনেক প্রতিষ্ঠিত কবির কবিতায় তা দেখিনি। একজন নিরহংকার, সদালাপী পরোপকারী মানুষ সম্পর্কে এ ধরনের মন্তব্য শুধু কষ্ট দায়কই নয় হাস্যকরও বটে । অবশ্য জনাব হুমায়ুন কবির মহোদয়কে ধন্যবাদ যে তিনি ইতোমধ্যে ট্যাটাসটি মুছে দিয়েছেন। মাঞ্জুর ভাইতো ময়ূর সাজতে যান নাই। তার ময়ূর সাজারও দরকার নাই। তিনি তো কাকই , সাচ্চা কাক। আমাদের কাকের রাজ্যে তিনিই কাকরাজ।
ভাইরাস নরকীট- ১১
ভাইরাস নরকীট সনাক্ত করে শাস্তি প্রদান ছাড়া সমাজকে সুস্থ রাখার বিকল্প
সাহিত্য সমাজে আগত এক দুষিত ভাইরাস নরকীট সম্পর্কে লিখতে গিয়ে মনে হল অনেকেই হয়তো ভাববে এসব মানুষকে জানানোর কি হল; নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিলেই তো হল। কিন্তু একজন মানুষ, কি পুরুষ কি নারী সত্যি যদি সমাজ সচেতন ও বিবেকবান সামাজিক জীব হয়ে থাকে তবে অবশ্যই সমাজের নরকীট সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করার দায়ভার নিজ কাঁধে তুলে নিতে প্রস্তুত থাকবে। শুধু তাই নয় আজ এই নরকীটের মাধ্যমে একটি বন্ধু মহল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আগামীতে যে আপনি বা আপনার কোন বন্ধুবলয় ক্ষতির শিকার হবেন না তার কি নিশ্চয়তা? সেই দায়ভার থেকে বর্তমান সাহিত্যসমাজ সহ অন্যান্য সকলকে চিনিয়ে দিতে চাই একটি নরকীটকে। সেই সাথে দাবি জানাই নরকীটের প্রকৃত শাস্তির জন্য তাদের কাছে- যারা সুশীল সমাজ, মা বোন কন্যা তথা নারীর সম্মান এবং সাহিত্য সেবক- লেখক ও কবিদের আত্মমর্যাদা রক্ষা করতে সদা প্রস্তুত। সেই লক্ষ্যে একটি দীর্ঘ লেখার অবতারনা করে আমি নূরিতা নূসরাত খন্দকার আরও অনেকের পক্ষ থেকে ন্যায্য প্রতিবাদ জানাতে চাই। তাই এটি কোন ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে লেখ্য বস্তু নয়। এটাকে সমাজে কিছু সম্মানিত ব্যক্তি নারী ও কবি সাহিত্যিক সম্পর্কে মানহানীকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সমাজবার্তা ও অন্যায়কারীর পরিচয় বার্তা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সম্মানিত পাঠককূলের প্রতি বিনীত অনুরোধ থাকবে। কারণ আমরা লেখক সমাজ মানেই আমাদের দেশের সাহিত্য ও শিল্প- সাংস্কৃতিক জগতকে কলুষমুক্ত রাখতে সদা অতন্ত্রপ্রহরী, নির্ভীক সেনা।
পুরুষের প্রতি নারীর কিম্বা নারীর প্রতি পুরুষের আকর্ষণ থাকবে সেটাই প্রাণী এবং মানব জগতের স্বাভাবিকতা। সেই দুর্বলতা চরিতার্থ করতে কেউ কেউ একাধিক নারী বা পুরুষের সাথে মানসিক ও শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত থাকে। সেটা স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক যাই হোক না কেন কোন অন্যায় বলে গণ্য হবে না যতক্ষণ ব্যক্তিস্বাধীনতা অতিক্রম করে মানুষ কোনো ভারসাম্যহীন আচরণ প্রকাশ করে। ভারসাম্যহীন আচরণ বলতে অশ্রদ্ধা, গীবত, মানুষের প্রতি মানুষের মূল্যবোধ অবক্ষয় এবং নিজের চরিত্রকে ভাল বলতে গিয়ে অন্যের চরিত্রের ওপর মিথ্যা অভিযোগে কলঙ্কিত করে তোলা। শুধু তাই নয়, অত্যাধুনিক যুগের যাবতীয় সুবিধায় এক বা একাধিক মানুষের ছবি বিকৃত করে চরিত্রের ওপর অযাচিত কলঙ্ক লেপটে দেয়া সত্যি গর্হিত অন্যায়। এই জাতীয় ভণ্ড ও প্রতারকের পাল্লায় পরে দৈনিক অসংখ্য মানুষের সাজানো ঘর-সংসার ভেঙ্গে যায়। অধিকাংশ ভণ্ড প্রতারক থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ক্ষতিগ্রস্ত যদি নারী হয়ে থাকে তবে তারা হয় সমাজে কুগল্পের খোঁড়াক। এমনকি নারীরাও ভণ্ডদের কথা ভুলে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের নিয়েই বাজে মন্তব্যে লিপ্ত থাকে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্তের কি ঘর কি সমাজ কি কর্মক্ষেত্র সকল যায়গাতেই অভাবনীয় মানসিক সঙ্কটে ভুগতে থাকে। অথচ তার একটিই মাত্র ছোট্ট ভুল তা হল- বন্ধু নির্বাচন ভুল। মানুষ চেনা একটা কঠিন কাজ। মূলত মানুষের দেহ অবয়ব চেনা ছাড়া মানুষের মন চেনা অসম্ভব। যেখানে মানুষ নিজেই আজ তার মন বস্তুকে আবিস্কার করতে পারেনি। একজন সাধারণ মানুষকে যদিও বা কিছু কথা কিছু আচরণ দিয়ে কিছুদিনের ওঠা বসায় মানুষটির ধরণ আন্দাজ করা যায়। কিন্তু মুখোশ ধারী একজন প্রতারকের ধরণ চেনা যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ বিষয়। আর যদি হয় যথেষ্ট বয়স্ক এবং সমাজের সম্মানিত কোন উচ্চ পদস্থ চাকুরীজীবী তবে তার ক্ষেত্রে তো আগে চোখের সামনে সম্মানের আস্তরণ ঝুলে থাকে। সন্দেহের চোখ তখনি ফোটে শুরু যখন ব্যক্তি নিজে কিছু ভুল করে বসেন একাধিক জনের সাথে একটি বন্ধু সমন্বয় দলের সাথে।তেমনি বন্ধুতে বন্ধুতে কথার আদান প্রদানে অনেকের ঝুলি থেকে বেড়িয়ে আসে কদর্য এক কবি বেশ ধারী। সাহিাত্য সমাজ কলুষিত করা ভাইরাস নরকীট- মুখোশধারী চরিত্রহীন মিথ্যুকের কাহিনী। শুধু তাই নয় সাইবার ক্রাইমার হিসেবেও নিজেকে জঘন্য অপরাধী হিসেবে মেলে ধরেছেন। কারণ ইতিমধ্যেই সে একাধিক মানুষকে জানিয়েছেন তিনি নারীদের ন্যুড ছবির সংগ্রাহক। কোন নারী তার কু’ইশারায় সাড়া না দিলেই সে নারী হয়ে যায় চরিত্রহীন, ন্যুড ছবির শিকার।
তিনি কবি- কারণ তার কবিতার বই আছে। তিনি কারো স্বামী, কারো বাবা, কারো শ্বশুর, কারো নানা। তিনি ষাটোর্ধ পুরুষ। তিনি যে কবি তা প্রমাণেরও নানান কায়দা আছে। তার জ্ঞানী দৃষ্টিতে বড় বড় অসংখ্য লেখকরা হলেন নারীখোর আর লুচ্চা। এমনকি যে ম্যাজিক লণ্ঠন তাকে সম্মান দিয়ে আড্ডার কবি হিসেবে ডেকে কবি সমাজে পরিচয় করে দিয়েছিল সেই ম্যাজিক লণ্ঠন এবং কর্ণধারকে নিয়েও তার কটূক্তির সীমা নেই। কিন্তু কেন তার কটূক্তি? প্রশ্ন করলে উত্তরে তিনি বলেন, তিনি একজন সম্মানিত কবি তার মুখের কথাই যথেষ্ট, কোন ব্যাখ্যার প্রয়োজন লাগে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় পাশ করা ছাত্র। সুতরাং তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত কবি।
প্রথমতঃ তার পকেটে ক্যামেরা থাকে। সাহিত্যের ভুবন ডিঙ্গানো কিছু সরল মানুষের বাড়িতে যাবে কারো না কারো ছুতো ধরে। ফেসবুকের দেয়ালে ঝুলিয়ে বিশ্ববাসীকে দেখাবে তিনি অমুকের বাসায় আজ তমুকের বাসায় কাল, সেই অনুষ্ঠানে, ওই মঞ্চে ইত্যাদি।
দ্বিতীয়তঃ পরিচয় মাত্রই জানবেন তিনি ইয়া বড় লম্বা চওড়া চাক্ ছিলেন। তার আলিশান ফ্লাট আছে। মূলত বরিশালে তার পূর্ব পুরুষ ছিল জমিদার। সামাজিক কোমর বেশ শক্ত পোক্ত। কারণ তার ছোট ভাই সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।
তৃতীয়তঃ কথা শুরু হওয়া মাত্রই আপনি যদি অবিবাহিত/ বিবাহিত/ ডিভোর্সি/ স্বামী বিদেশে ইত্যাদি যে কোন প্রকারের (নারী) হয়ে থাকেন তবে আপনার মোবাইল নম্বর এবং ফেসবুক আইডি চেয়ে নেবে। চতুর্থতঃ আপনাকে আধুনিক আধুনিক গ্রন্থের নাম সহ চিন্তা প্রকাশ করে আপনাকে তাক লাগিয়ে দেবে। পঞ্চমতঃ ইনবক্সে আপনাকে কবিতার সুরে সুরে মিষ্টি ঝাল নুন বাংলা সাহিত্যের মহারথী হিসেবে জাহির করবে; ফোনালাপেও আপনাকে বুঝিয়ে দেবে কত বড় বড় সাহিত্যিক নিয়ে তার ওঠা বসা। মোদ্দা কথা তিনি খুব বড় মাপের কেউ।
তারপর যা যা ঘটবে বা ঘটবেঃ
আপনাকে বাসায় নিমন্ত্রণ করবে চা খেতে। গর্বের সাথে জানাবে আরও কিছু মহারথীরা তার বাড়িতে আসবে। কিন্তু আপনিই প্রধান এবং বিশেষ অতিথি। পরিপাটি গোছালো পরিবারের সাথে পরিচয় করাবেন। এরপর আন্তরিকতার বহর বেড়ে ওঠা মাত্রই গোপনে গোপনে আপনার (নারী) আশেপাশে লেপটে থাকা যাবতীয় বন্ধুমহলে আপনার চরিত্র সম্পর্কে আজে বাজে বানোয়াট কথা ছড়াতে থাকবে। এমনকি আপনি যে কত খারাপ তা প্রমাণ করতে যেহেতু তার পকেটে মোবাইল থাকে আপনার যে কোন ছবি পর্ণগ্রাফির আদলে পেশ করে আপনার পরিচিতদের মাঝে বিতরণ করে দেখাবে। এ সবই ঘটনে আপনার অগোচরে। আপনার দৃঢ় বিশ্বাস থাকবে তার মত নীতিবান মানুষ এবং আপনার সবচেয়ে শুভাকাঙ্ক্ষী তিনি ছাড়া দ্বিতীয়টি আপনার আশে পাশে কেউ নেই।
দুর্ভাগ্য বশতঃ এই নরকীটের সাথে পরম শ্রদ্ধেয় অগ্রজ কবি, ঔপন্যাসিক, কলামিস্ট বুহুগুণে গুণান্বিত সাযযাদ কাদির এবং আমার পরিচয় হয়েছিল ম্যাজিক লণ্ঠন সাপ্তাহিক কবিতা আড্ডায়। সেখানে উপস্থিত সবাই জানতে পারি তিনি সত্তর দশকের আলোকিত ও আলোড়িত কবি শ্রদ্ধেয় জাহাঙ্গীর ফিরোজ এঁর একজন দীর্ঘকালের বন্ধু সুবাদে ম্যাজিক লণ্ঠন আড্ডার সভাকবি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। পারিচিতি পর্বে আরও জানতে পারি তিনি বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিব ছিলেন। রিটায়ার্ড করার পর ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে আছেন বর্তমানে। পরবর্তীতে গল্প প্রসঙ্গে জানতে পারি তিনি কোন এক সময়ে বান্দরবনের জেলা প্রশাসকও ছিলেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধার দৃষ্টি আরোপিত হয়েছিল বয়স এবং কর্মকাহিনীর পরিচয় সুত্র ধরেই।
এর কিছুদিন পর প্রেসক্লাবে কবিতাপত্রের মাসিক আড্ডায় আমাকে শ্রদ্ধেয় সাযযাদ কাদির নিমন্ত্রণ জানালে সম্মান করে তাকেও সাথে নিয়ে যাই (কারণ ইতিপূর্বে তিনিই জানিয়েছিলেন এমন কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক)। সেখানে ছবি তোলা সহ কবির সাংবাদিক ও কবি শ্রেণির একাধিক নারীর নাম্বার এবং ফেসবুক আইডি সংগ্রহ করেন। পরের মাসে যখন তাকে নিয়ে আবার প্রেসক্লাবে যাই তখন তিনি আমাকে জানান, সে অল্পবয়সী নারীকবি তার প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে অস্থির, তিনি তাকে আর সামলাতে পারছেনা। আমি খুব অবাক হয়ে তাকে প্রশ্ন করেছিলাম- “তার সাথে তো গতমাসেই পরিচয় মাত্র। ওই মেয়ের এত কথা জানলেন কি করে? তাছাড়া একটা মেয়ে এত দ্রুত তার মনের কথা বলে দিতে পারে নাকি”! তার উত্তর যা ছিল, ফোনে প্রতিদিন সব শেয়ার করেছে। কিন্তু তিনি সে মেয়েকে মোটেও লাইক করেন না। কারণ সে মেধাহীন। তিনি আবার মেধাহীন নারীদের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারেন না। অথচ প্রেসক্লাবে পৌঁছানোর পর দেখেছিলাম তাজরিনের সাথে ছবি তুলতে আর নানান ইশারার কথায় তার চেয়ে ব্যাস্ত আর কেউ নয়। সৌভাগ্যবশতঃ (আমার এই কথার প্রমাণ সাপেক্ষে) সেদিন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, লেখক, কলামিস্ট এবং কবি শামসুল আলম বেলাল সাহেবও উপস্থিত ছিলেন। আমি অনেক আগে থেকেই তাজরিনকে মেধাবী পরিচয়ে চিনতাম বলেই আমার আর তাজরিনের সাথে আলাদা করে জেনে নেওয়ার জন্য কথা বলার প্রয়োজন মনে হয়নি। বরং ভদ্রলোকের সাথে তাজরিনের মেধার পরিচয় ঘটুক সে প্রত্যাশায় তাকে বলেছিলাম, “সময় সব বলে দেবে। অল্প পরিচয়ে মেধা চেনা যায় না”। তিনি উত্তরে যা জানালেন, দীর্ঘদিন প্রশাসনের মত জটিল জায়গা তিনি সামলিয়েছেন সুতরাং তার কাছে মানুষ চেনা কোন বিষয়ই নয়। তখন নিজেকে বড় বোকাই মনে হয়েছিল আমার। কারণ একজন প্রাক্তন সচিবকে সময়ের উদাহরণ দেয়ার কোন দরকার ছিল না। স্বভাব হেতু আমি কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলিনা এবং শোনারও অবকাশ রাখিনা বলেই ওসব কথা আর শুনতেও চাইলাম না।
সেদিন উম্মুল খায়ের নামে আরও একজন কবিকে ফোনে প্রেসক্লাবে ডেকেছিলেন আমাকে না জানিয়েই। আমাকে না জানানোর কথা এই কারণেই বললাম কারণ আমি সেদিন অবাক হয়েছিলাম তার কাণ্ডজ্ঞান দেখে। একটি নির্ধারিত বলয়ে তিনি আমার মাধ্যমে পরিচিত হয়েছেন অথচ তিনি আমাকেই না জানিয়ে নিমন্ত্রণ করেছেন অন্য কাউকে সেই আচরণগত নমুনা দেখে আমি কিছুটা বিস্মিতই হয়েছিলাম। কিন্তু শ্রদ্ধার নজর আগে থেকেই নিমজ্জিত ছিল বিধায় আর সে বিষয়ে কোন কথা বাড়াইনি। কবি উম্মুলের সাথেও ছবি তুলতে মহাব্যস্ত ছিল এই ষাটোর্ধ বয়সী কবি। পরে উম্মুল খায়ের আমাকে দেখে মনে করিয়ে দিলেন ২০১৪ সালে বিশ্ব কবিতা উৎসবে কবি সাদিক মোহম্মদ এঁর মাধ্যমে তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। আমারও মনে পরে গেল সব। উম্মুল খায়ের কবি সাদিক মোহম্মদের প্রসঙ্গ টানতেই ষাটোর্ধ কবি অপ্রত্যাশিতভাবে গর্জে বললেন, ‘সাদিক সেই স্টুপিড বয়। সে তো একটা স্টুপিড ছেলে। ইডিয়ট। কিসের কবি?' বিস্ময়ে আমি তাকে পাল্টা প্রশ্ন করি “আপনি তাকে কেন স্টুপিড বয় বললেন? কারণ কি? সাদিক সিনিয়র হলেও আমাদের বন্ধু সার্কেলের একজন ভাল বন্ধু। আপনি তাকে কতদিন ধরে চেনেন?” কিন্তু তিনি কোন কারণ ব্যাখ্যা দিতে প্রস্তুত নন। সাফ জানিয়ে দিলেন। আমি দ্বিতীয়বার বিরক্ত সুরে জানতে চাইলে তিনি আবারও গর্জানো সুরে বললেন, “ওকে সামনে পেলে আমি থাপ্পড় দিয়ে তারপর বলব ও কেন স্টুপিড। ওকে আগে সামনে পাইয়া নেই তারপর জানবেন ও কেন স্টুপিড”। যাই হোক সেদিন এই জাতীয় কথা শুনে খুব বিব্রত এবং বিরক্ত হয়েছিলাম বেশ। সেখানে প্রবীণ সাংবাদিক সহ সম্পাদক গোছের মানুষেরা থাকায় পারিপার্শ্বিক কারণে সাদিক প্রসংগ ইচ্ছে করে স্থগিত রাখলাম। কিন্তু মনের ভেতর প্রচন্ড বিষ ঢেউ বয়ে গেল সেটাও ঠিক। সাদিক মোহম্মদের মত একজন শান্ত ও কাব্য নিবিষ্ট কবি সম্পর্কে প্রেসক্লাবের বুকে দাঁড়িয়ে এই কথা বলার কি কারণ থাকতে পারে সেটা জানার জন্য আমার ভেতর বহুবার আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু প্রশ্ন জিজ্ঞেস মাত্রই তিনি উত্তর না দিয়ে দু’দফা পরিবেশ অশান্ত করে তোলায় সেই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছিল পরিবেশ শান্ত রাখাটাও সামাজিক দায়। মনের ভেতরে অপেক্ষার বেলাভূমি গড়ে তুলেছিলাম।
আগেই জানিয়েছিলাম বলে ঐদিন আমি তাকে মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মহোদয়ের বাসার সাহিত্য ও সংগীত আড্ডায় নিয়ে যাই। সেখানে কবি শেলিনাজ সহ আমার প্রিয় অগ্রজ কবি বন্ধু, রেডটাইমস পত্রিকার সম্পাদক সৌমিত্রদেব এবং ময়মনসিংহ গীতিকা সংকলক ও গবেষক আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন এর প্রপৌত্রী অধ্যাপক-গবেষক শ্রদ্ধেয় দেবলীনা দিদির সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে। সে সব ছবি সহ তার ফেসবুকে পোস্টে ঢালাও প্রচারও করতে কার্পণ্য করে নাই তখন। এরপর 'এইবেলা' পত্রিকায় দেবলীনা দিদির ইন্টারভিউ উপলক্ষ্যে অংশগ্রহণ করে। আমাকে ছাড়া তিনি নিমন্ত্রণ পান নি বিধায় আমাকেও উপস্থিত থাকতে হয়েছিল।
আমি তার বাসায় যে ক'বার নিমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছিলাম তার মধ্যে প্রথম দিনঃ তিনি আমাকে সন্ধ্যা সাতটায় কৃষিমার্কেট এর কাছে মজা নামে একটি রেস্টুরেন্টে ডাকলেন। জানালেন, সেখানে কিছু কবি বন্ধুদের সাথে একটি নান্দনিক সাহিত্য আড্ডা চলছে। আমাকেও সেখানে যোগ দিতে ডাকলেন। আড্ডা শেষে তিনি তার বাসায় আমাকে নিয়ে যাবেন। আরও জানলাম তার স্ত্রীও আমার জন্য খাবার রান্না করে অপেক্ষায় আছেন। মজায় গিয়ে পরিচয় হল শারদীয়া সম্পাদক নূরুল্লাহ মাসুম, নাট্যকার ও কবি মাহবুব লাভলু, শিক্ষা অফিসার জেসমিন আক্তার, সংগঠক ও লেখক, কবি জাকিয়া শিশির, কবি ও সম্পাদক এবং মজা রেস্টুরেন্ট কর্ণধার সাদাফ হাসনাইন মাঞ্জু এবং শিক্ষা অফিসার (বিসিএস) চঞ্চল ভৌমিক প্রমুখের সাথে।
দ্বিতীয় দিনঃ কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন। মূলত তাঁর কথা বলায় আমি আর নিমন্ত্রণ ফেলতে পারিনি সেদিন। সত্তর দশকের সেই বিখ্যাত কবির কবিতা এবং আমার গান মিলে সুন্দর কিছু সামান্য কাটিয়েছিলাম।
তৃতীয়দিনঃ শ্রদ্ধেয় কবি দিলতাজ রহমান আপা এবং আলোচিত ব্যক্তির দু'জন বাল্যবন্ধু বেড়াতে এসেছিলেন। তাদের একজন (নাম মনে নেই) মাইটিভি'র উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। নরকীটের গুণী মেয়ের সাথে একটা সহজ রসিকতা (সম্ভবত আমার কথার আদল ভাল করে না শুনে) দিলতাজ আপা অভিভাবক সুলভ আমাকে নীতি কথা শুনিয়েছিলেন। যা সেই সময়ের অন্য আমার ভাল লাগেনি মোটেই। কিন্তু ভাল না লাগা কারো সাথেই প্রকাশ করিনি কারণ তিনি আমার বয়োজ্যেষ্ঠ এবং সম্মানিত নারী। আর না বলা ফাঁকফোকরে ঝোপ বুঝে কোপ মারার সুযোগ ছাড়েনি সেই নরকীট। আমাদের দুজনের অজান্তেই খেলেছে কুৎসা রটানোর খেলা। সেদিন আমাকে রাতে থাকতে বলেছিল নরকীট এবং তার সহধর্মিণী। সেদিন বলেছিলাম অন্য কোন দিন এসে আরও গান শোনাবো এবং থেকেও যাব।
চতুর্থ বা শেষদিনঃ রোজার ঈদের অগ্রিম নিমন্ত্রণ থাকায় ঈদের পরদিন নৈশ ভোজনে তার বাসায় যাই। ঘনবৃষ্টিময় রাতের আকাশ। রাস্তায় রিক্সা পাওয়া যাবে কি না এসব ভাবতে ভাবতে ঘরে ফেরার জন্য উদগ্রীব আমি। আমাকে বলেন, ‘বৃষ্টিতে এখন আর না যেয়ে আজ থেকেই যান। আমার বাসায় কোন অসুবিধা নেই। এক্সট্রা রুম পরেই তো আছে’। আমি অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তার স্ত্রীও বলেন, “নূরিতা আজ রাতে থেকে যাও তো। থাকলে সত্যি খুব খুশি হব। আকাশও খারাপ। আর এখন এমনিতেও বের হতে পারবে না”। আমি তাদের জানালাম আমার লেখা জমা দিতে হবে। বাসায় না ফিরলে লিখতে পারব না। আমাকে রাতের মধ্যেই লিখতে হবে”। নরকীট বলল তার ল্যাপটপ থাকতে চিন্তা কি। মূলত লেখার নিশ্চয়তা পেয়েই থেকে গেছিলাম সে রাতে। ভালই কেটেছিল। অনেক রাত পর্যন্ত তার স্ত্রী এবং দুই মেয়ে ও নাতির হাতে মেন্দি পরিয়ে দিয়েছিলাম। তার বড় মেয়ে বিজুয়া আমার হাতে যত্ন ভরে মেন্দির নকশা এঁকে দিল। মেন্দি উৎসবের পাশাপাশি সবাই মিলে রেডিও ভূমি’র প্রথম প্রয়াস শ্রুতি নাটক শুনেছিলাম। সে নাটকে তার ছোট মেয়ে নায়িকা চরিত্রে ছিল।
সেদিন নরকীটকে সাদিকের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তর্জন গর্জনে পুনশ্চ অস্থিরতা দেখা যায় তার চোখে মুখে। পারলে তখনি সাদিক তার সামনে দাঁড়ালেই সে তাকে জুতিয়ে কবিতা কি জিনিস তা শেখাত। আর তার মত উচ্চ পর্যায়ের কবির সাথে (অজ্ঞাত) বেয়াদবির জন্য সাদিকের বারোটা বাজিয়ে তেরোটা করে ছাড়ত। এসব গর্জনের হম্বিদম্ভি শুনে তার স্ত্রী স্বয়ং তাকে সহজ বাংলায় থামালেন, “তুমি ওসব কিছুই করতে পারবা না। ওইসব মুখেই তোমার শেষ। খামোখা অতিরিক্ত কথা বলার কি দরকার”। আমি সাথে যোগ করে বললাম, “শোনেন আপনি যখন কারো সম্পর্কে কোন নেগেটিভ কথা বলবেন বিশেষ করে প্রেসক্লাবের মত স্থানে তখন শ্রোতার কাছে প্রধান প্রশ্ন দাঁড়াবে মানুষটার কোন বিষয়ে আপনি ক্ষিপ্ত। কারণ ব্যাখ্যা ছাড়া আপনার কোন কথাই কথা নয়। একজন সম্পর্কে বলতে গেলে যুক্তি ও কারণ প্রথমে নির্দেশ করবেন। সেটা বলতে না পারলে অহেতুক আপনার কথা বলাই উচিত না”। আমার এই কথা শুনে সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বলল, “আমি বলেছি সাদিক একটা স্টুপিড বেয়াদপ। ব্যাস সে তাই। আমার মুখের কথাই যথেষ্ট। আমি বাংলা সাব্জেক্ট এখনো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই। সাদিক কোন কবিই না। কি কবিতা লেখে আমার জানা আছে। সাদিককে আমি বাগ মত পাইলে ধরব তো। সে কি কবি হইছে সেইটা সবার সামনে তুলে ধরব। আমি ব্যাখ্যা কেন দিব আপনাকে”। আমার জানা ছিল না তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য পড়ান। আর ঘটনা কিছু না বলায় আন্দাজও করতে পারলাম না সাদিক সম্পর্কে কেন এইসব কথা তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলে বেড়ান। তবে প্রতিবাদ করেছিলাম সামান্য উত্তেজিত স্বরে কারণ তার একটা কথা ছিল ভীষণ আপত্তিকর। তা হল সাদিক কোন কবিই না- এই কথা শুনে আমি বিরক্তি ঝেরেছি আমার ভদ্রতা বজিয়ে। এরপরেই একে একে আবিষ্কার করতে থাকলাম সম্মানিত অনেক নারী ও পুরুষদের ব্যক্তিত্ব-চরিত্র নিয়ে মনগড়া মিথ্যে কথা এবং অসম্মানজনক কথা বলাই তার প্রধান কাজ। সেগুলো জানার পর কি শাস্তি হওয়া উচিত তা আপনারাই বিচার করুন।
প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখছি, বাস্তব জগতে স্বনাম ধন্য কবি যিনি একজন রত্নগর্ভা জননী, একজন সুপ্রতিষ্ঠিত গল্পসাহিত্যিক এবং কবি। তিনি মানুষের মঙ্গল ছাড়া অমঙ্গল করেন না- এইটুকু তথ্য আমার সুবিস্তৃত বন্ধুমহলের সুবাদে আগেই জেনেছিলাম। তবে আমি নিজে একদিন তাকে আরও অনেক উঁচু মহৎ আসনে দেখেছি, যেদিন গল্পকার ও কবি দিলতাজ রহমান আপা আমাকে স্নেহ-আদর ভরে (জাদুঘরে) কাব্যলোক পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য বুকে জড়িয়ে আশীর্বাদ করেন। এবং আমাকে খুব মিষ্টি করে বলেন, “নূরিতা তুমি আমার সাথে যোগাযোগ রেখো। দোয়া করি তুমি অনেক বড় হও”। সৌভাগ্য কাকে বলে আমি জানি না। তবে একজন অগ্রজ সাহিত্যিক যখন সবার সামনে বুকে জড়িয়ে স্নেহ আর ভালবাসা দিয়ে আশীর্বাদ করেন তখন তাতে সৌভাগ্যের চেয়েও অনেক বেশি কিছু মনে হয়। হৃদসত্য হল সেদিন মা মা গন্ধ পেয়েছিলাম গোপনে গোপনে। কারণ আমার সংগ্রামী আম্মু পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন অনেক আগেই। তাই হয়ত গোপন হৃদয় কোন প্রকৃত সংগ্রামী নারীর স্পর্শ পেলে মাতৃস্নেহ আকাঙ্ক্ষাকেই উস্কে দেয়। অথচ মা-সম এই মহান নারী সম্পর্কেও বাজে কথা নরকীট ছড়িয়ে বেড়ায়। শুধু তাই নয় তাঁর কাছেও আমার সম্পর্কে জঘন্যতম বানোয়াট কথা বলে আমার পরিচয় দিয়েছিল। কিন্তু সেগুলো আমাদের উভয়ের অগোচরে করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে দু’জনের কাছেই ধোয়া তুলসী থেকে যেতে পারনি আর।
কতটা জঘন্য এবং চরিত্রহীন হলে একটা মানুষ রাতে মেহমানকে থাকতে দিয়ে পরে রটিয়ে বেড়ায় মেহমান তার সাথে শারীরিক সম্পর্কের জন্য ছিল। এখানে আমার প্রশ্ন হলঃ সে নিজে তাহলে কেমন স্বামী বা বাবা যার স্ত্রী ও কন্যাদের উপস্থিতিতে হাঁটুর বয়সি মেহমানের সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার বানোয়াট গল্প রটিয়ে বেড়ায়? কি ধরণের মানুষ যে তার বৌয়ের নামেও কুৎসা রটিয়ে আরেকজন সম্মানিত নারীকে (সরকারি কর্মকর্তা) প্রেম নিবেদনের মোড়কে কু-প্রস্তাব দিয়ে অসম্মান করে? শুধু তাই নয় কিছু মেয়েদের যৌন উস্কানি দিতে আরও জঘন্য পন্থা অবলম্বন করে। ফটোশপে ছবি এডিট করে পর্ণ ছবিতে রূপান্তর করে। তারপর এক নারীর কাছে আরেক নারীর নগ্ন ছবি দেখিয়ে তার জনপ্রিয়তার বড়াই করে। এভাবে কি কবি হওয়া যায়? এমন কি মিথ্যে কুৎসা রটিয়ে মজা রেস্টুরেন্টের মালিক কবি এবং সাহিত্য পত্রিকার চর্যাপদ এর সহঃসম্পাদক সাদাফ হাসনাইন মাঞ্জু সম্পর্কে একটি পোস্ট দেয়। কারণ কবি সাদাফকেই প্রথম কয়েকজন নারী ষাটোর্ধ এই কবি সম্পর্কে অভিযোগ দেয়। আর সেটার আঁচ বুঝতে পেরেই সে কবি সাদাফ এর উপার্জন কেন্দ্র 'মজা' সহ কবিত্ব নিয়েও কটু কথা লিখে তার ফেসবুকপোস্টে দিলে আমি সরাসরি (কমেন্ট বক্সে) জানতে চাই একজন কবি সম্পর্কে সমালোচনা করতে গিয়ে তার সৎ পথের উপার্জনকে কেন আঘাত করা হল। আরও লিখি কবিত্বের দুর্বলতা আলোচনা করতে হলে কাব্যগ্রন্থ সহ কবিতার উদাহরণ দেয়া সমালোচকের অবশ্য কর্তব্য। নাট্যকার ও কবি মাহবুব লাভলু’র জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে কবি সাদাফকে দেখা মাত্র পরিবেশ দূষিত করে সেদিনই সবার চোখে সে একটা নরকীটে পরিণত হয়। তারচেয়েও জঘন্য কাজ করে সকলের শ্রদ্ধা বঞ্চিত হয়েছে সেদিনের আনন্দ-অনুষ্ঠানে। আয়োজকের (নারী) সরলতার সুযোগ নিয়ে তার অজান্তেই তাকে প্রেমিকা পরিচয় দিয়ে ফোন ধরিয়ে দিয়ে সুকৌশলে ব্যাবহার করে ফোনের ওপারে অপর এক নারীকে ঈর্ষান্বিত করার ফন্দী এঁটে হয়তো সফল হয়েছিল। কিন্তু রমনার সেই বিকেলে তার জঘন্য চেহারা আবিষ্কার করে সকলের হৃদয়ে ঘৃণার কালো ছায়ায় অন্ধকার দেখছিল। কারণ আয়োজক জেসমিন আক্তার সম্পর্কে যেমন কুৎসা অন্যের কাছে রটেছেন তেমনি জেসমিন আপার কাছেও অন্যান্য নারী সম্পর্কে আজেবাজে মন্তব্য ছড়িয়েছে। সেদিন যে তার ময়ূরপুচ্ছ পরা দাঁড়কাক চেহারা উন্মোচিত হয়েছিল সেটাও সে না জেনে নিজেরি ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন চর্যাপদ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক এবং মজা রেস্টুরেন্ট এর মালিক সম্পর্কে কদর্য কথা। আর তখনি পাল্টা পোস্ট মাঞ্জু ভাই সহ মাহবুব লাভলু এবং চঞ্চল ভৌমিক দিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি পোস্টে আমি সহ অনেকেই নরকীটের কদর্য পোস্টের তুমুল সমালোচনা করি।
সম্মানিত কবি লেখক ও সাহিত্যিক সকলের কাছে আমার প্রশ্ন- মাথামোটা এই গায়ে মানেনা আপনি মোড়লকে কি কবি সমাজে প্রবেশ করতে দেয়া আর মটেই উচিত হবে? সমাজের সকল নারীর কাছে আমার প্রশ্ন- যদি এই ষাটোর্ধ নোংরা ইতর পুরুষকে তার বউ-বাচ্চারা পাগল বা মানসিক রোগী বলে ক্ষমা প্রত্যাশা করে তবে কি নরকীটের সেই নতুন ভেক কে প্রশ্রয় দেয়া উচিত হবে। কারণ সে যে পাগল নয়, প্রকৃতই ভণ্ড। তার মাধ্যমে আরও অজস্র মা-বোনের ইজ্জত ডোবানোর সুযোগ করে দেয়া কি আমাদেরই অন্যায় হবে না? নারীর নগ্ন শরীরের ছবি ছড়ানো কি সাইবার ক্রাইম নয়? সমাজের খুঁটি তার ছোটভাই সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা- সে কথা ভেবে কি তার সাইবার অপরাধ অগণ্য, নির্বিচার থেকে যাবে? বয়সে অনুজ হলেও যত্র তত্র কবি সাদিক মোহম্মদ, কবি সাদাফ হাসনাইন মাঞ্জু কিম্বা আরও অন্যান্য সম্মানিত কবি ও নারী সম্পর্কে ব্যাখ্যাহীন ভাবে কুৎসা রটিয়ে মান হানীকর কথা বলার অধিকার তাকে কে দিয়েছে? সমাজে সম্মানিত নারী, লেখক ও সুপ্রতিষ্ঠিত কবিদের সাথে ছবি তুলে পরবর্তীতে তাদের সম্পর্কে কুৎসা রটানোর দুঃসাহস কোথায় পায় সে? আমরা চাই এর যথোপযুক্ত জবাব তাকে দিতেই হবে এবং জনসমক্ষে তাকে নিরপরাধ নারীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। সাইবার ক্রাইম অপরাধের আওতায় এনে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।
এই নরকীটেরা সমাজে বিচার বহির্ভূত থাকা মানে মানুষের সম্পর্কের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা, বিশ্বাস হারিয়ে ফেলা এবং যার ফলে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে নির্বাক মেনে নেয়া। একটি বিবেকবান সচেতন সমাজ কখনই তা ঘটতে দিতে পারে না। তার উপর আমাদের দেশ- বাংলাদেশ, একাত্তরের আলোকদীপ্ত চেতনায় জাতির প্রতারক রাজাকার নির্মূলকারী জাতি হিসেবে আজ আমরা সারা বিশ্বে সমাদৃত। স্বাধীন দেশের বুকে যারা সমাজকে সুশীল মুখোশে প্রতারণা ও ভণ্ডামি দিয়ে কলুষিত করছে তারাও এক প্রকারের রাজাকার। এদের জন্যেও শাস্তির বিধান আমাদের দেশে মজুত আছে।
তবুও এই জাতীয় অপরাধীরা যদি বিচার বহির্ভূত থাকে তবে আগামী সমাজও কলুষিত থাকবে। আর বারবার প্রতারিত হতে থাকবে সাহিত্য শিল্পাঙ্গনের বন্ধু সুলভ সুস্থ পরিবেশ। কবিদের প্রতি, লেখকদের প্রতি সর্বোপরি সৃষ্টিশীল মানুষদের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা হ্রাসের অবকাশ থেকে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে এমন কি সৃজনশীল মানুষেরা নিজেরাও একে অপরের প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই অতি দ্রুত এই জাতীয় ভাইরাস নরকীটদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি বিধান করা ছাড়া সমাজকে সুস্থ রাখার বিকল্প নেই।
স্বঘোষিত কবি বনাম হুকুমালি ডাকাত।
সূত্রঃ ভাইরাস নরকীট-১১, Nurita Nusrat Khandoker
বয়স বাড়লে মানুষ মেধা, মনন, বাচনে পরিপক্ক হয়। ষাটোর্ধ হলে হলে হয়ত কায়িক কিছুটা ভাটার টান লাগে, তবে সুদীর্ঘ জীবনের নানান অভিজ্ঞতার আলোকে মেধাটুকু অন্তত শাণিত হয়...যার প্রতিফলন মেধা, মনন, বাচনে প্রতিফলিত হওয়াই বাঞ্চনীয়। সেভাবেই আমরা দেখে অভ্যস্ত।
সম্প্রতি ফেবু সম্রাজ্যে বিভিন্ন বন্ধুজনের ওয়াল থেকে লাইক-কমেন্ট হয়ে বিশাল কলেবরের একটি স্ট্যাটাস অন্য একজন বন্ধুর ওয়ালে তার আগ্রহে দৃষ্টিগ্রাহ্য হলো। আসলে দৃষ্টিগ্রাহ্য বললে বিষয়টিকে হালকা করা হয়....আমার মনে হচ্ছে প্রচন্ডরকম একটা সাইক্লোন, না কি সুনামি উঠেছে...বলাই বাহুল্য। স্ট্যাটাসটি নিজের টাইমলাইনে পোস্ট করেছেন সৃজনশীল বন্ধু Nurita Nusrat Khandoker এবং এর সাথে আলোচিত ব্যক্তিটির লিঙ্ক এ্যড করেছেন বলে সঙ্গত কারণে বিষয়টি স্বাভাবিক গতিতে আমার ওয়ালে উদ্ভাসিত হয়নি। সঙ্গত কারণ মানে, ওই লিংকের ব্যক্তিটির সাথে আমার সংযোগ নেই.. তবে সপ্তাখানেক আগেও ছিল। কোন এক ভর-মজলিসে তার শ্রুতিকটু একখন্ড অর্বাচিন বাক্যালাপের অম্লমধুর প্রতিবাদ করার খেসারত দিয়েছি তার তরফ থেকে আনফ্রেন্ড হয়ে। আর আমার যা স্বভাব....মুহূর্ত সিদ্ধান্তে নিশপিশে আঙ্গুলে কি বোর্ডের ছোঁয়ায় আনন্দচিত্তে আমি করে দিলাম ব্লক। সে যাই হোক...প্রসঙ্গে আসা যাক...তিনি সরকারের একজন সাবেক সচিব বলে শ্রুত। তার দেয়া হিসেব মতে অবসরে (?) গিয়েছেন আরও সাত বৎসর আগে। ফেবু জগতে তার সাথে বছর দুয়েক থেকে এ্যাড থাকলেও সম্মুখ পরিচয় হলো এই প্রজন্মের কতিপয় সৃজনশীল গণমানুষের আড্ডাস্থল MAZAA রেস্তরাঁ-এর আঙ্গিনায় কবি বন্ধু Sadaf Hasnaeen Manzoor-এর সান্নিধ্যে ...যেখানে সৃজনশীল মানুষের মিলনমেলা। না, শুধু পুরুষ ‘মানুষ’ নয়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ‘মানুষ’গণের। সেই আড্ডায় কবিতা হয়, গান হয়, টেলিস্ক্রিপ্ট নিয়ে কথা হয়, সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন হয়....গল্প বলা হয়। মেধাভিত্তিক আলোচনা-সমালোচনা...সবই হয়। আমার সৌভাগ্য... সংস্কৃতির বিভিন্ন অঙ্গনের এই প্রজন্মের বেশ কজন প্রতিভাবানের সাথে পরিচয় হয়েছে সেই আড্ডায়। তারই মাঝে আলোচিত সাবেক সচিব এবং কবি জনাব হুমায়ুন কবির–এর সাথেও পরিচয়। তিনি একদা তার লেখা একটি কাব্য উপহার দিয়েছিলেন আমায়। জানলাম তিনি ‘অর্ণব আশিক’ নামে কবিতাচর্চা করেন। তার কবিতা কিংবা আবৃত্তি শ্রবণের সৌভাগ্য হয়েছিল ‘কাব্যলোকে কাব্যপাঠ’ বর্ষা কবিতা উৎসবে, অতি সম্প্রতি। যেখানে ষড়ঋতুর প্রতি ঋতুতে কবিতা পাঠ হয়, সারা দেশ থেকে প্রেরিত কবিতার মধ্যে পাঁচজন কবিকে সেরা মনোনিত কিংবা বাছাই করে পুরস্ক্রৃত করা হয়। শারদীয়া সম্পাদক ও কবি নুরুল্লাহ মাসুম-এর উদ্যোগ ও সাপ্তাহিক শারদীয়া প্রযোজনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ঋতুর গান, আবৃত্তি, নাটক মঞ্চায়ন হয়। উৎসবে পঞ্চম থেকে একে একে যখন তৃতীয় পুরস্কার ঘোষণা হয়...আমাদের সবার স্নেহভাজন সৃষ্টিশীল কবি ও কণ্ঠশিল্পী Nurita Nusrat Khandoker-এর নাম। পুরো হলসুদ্ধ করতালির মাধ্যেমে আমরা সবাই যে যার মতো উইশ করি এই লক্ষ্মী বোনকে। সবশেষে ঘোষিত আমি যখন প্রথম পুরস্কার গ্রহণ শেষে মঞ্চ থেকে নেমে আসছিলাম, সামনের সারিতে বসা এই আলোচিত সেলিব্রেটি আমার তৃষ্ণার্ত দৃষ্টিতে জাস্ট আড় চোখ তাক করেছিলেন মাত্র। অবশ্য তাতেই আমি খুশি ছিলাম...ধারণা করেছিলাম...ওনার মতো উচ্চপদস্থ একজন গুণী মানুষ একবার নজর ফেলেছে তাতেই আমি ধন্য। এরপর কফির আড্ডা, ফটোসেসন...ধারণা করেছিলাম তিনি হয়ত এই নবীন কাননে আসবেন না...তবে এসেছিলেন...ক্যামেরা হাতে। আর তখনই এমন সেলিব্রেটিকে আবিষ্কার করা শুরু করলাম——নতুন করে। যেটা নূরিতার স্ট্যাটাসে সম্পূর্ণতা পেয়েছে। তাই আর আলাদা করে সে বিষয়ে যাচ্ছি না। তবে আমার এক স্নেহভাজন ফেবু বন্ধু, স্বকীয় কবি ও গল্পকার মুখ গোমড়া করে আমায় অনুরোধ জানালেন, এই মুহূর্তে সে এই ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে চায়। অবশেষে আমার কৌশলী জেরার মূখে জানা গেল——হেতু। জঘন্য...জঘন্য। ক্রমশ জানা গেল আমার এই অনুজের ইনবক্সে অশালিন, শ্রুতিকটু ছন্দের ঢল নামে প্রায়শঃ। সে আমাকে আগেও প্রসঙ্গত জানিয়েছিল...তবে বিশ্বাসের জায়গাটা স্থির রাখতে অমন পদস্থ সেলিব্রেটির বিরুদ্ধাচরণ আমলে নেইনি। কত বড় মাপের মানুষ....হয়ত কোথাও বুঝতে ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে——এমন প্রবোধ চাপিয়ে দিয়ে। তারপর শুনলাম তার ধমকের বহর——‘আমি সাবেক অমুক…..আমার সান্নিধ্যের জন্য কতজন ওয়েটিংয়ে… সবাইকে আমি পাত্তা দেই না। ওদের অঙ্গে রূপ-রস থাকলেই হয় না…কার্যকর গুণ-রসও থাকতে হয়…যা তোমার/আপনার মধ্যে অঢেল….তাই ভাললাগে বলে….তুমি/আপনি বুঝতেই চাচ্ছ না….বোকার হদ্দ…!’ এই হচ্ছে তার স্বাভাবিক এপ্রোচিং….(আমি শুনে বলছি)। এরপর ফোন কল কিংবা ম্যাসেজ বক্স। দাওয়াৎ….গিফট…এ পর্যন্ত না হয় যুক্তির খাতিরে মেনে নেয়া গেল…কিন্তু যে এই অন্যায় আব্দার মেনে নিতে চাইবে না…তখনই শুরু হবে হঠাৎ ভাল লাগা থেকে ছুটে যাওয়া মানুষটার বিরুদ্ধে অপপ্রচার কিংবা বিষোদাগার… অপরের কাছে। ‘আমি সাধু পুরুষ——ও চরিত্রহীন, আমায় এপ্রোচ করেছে। ওর সাথে যেন কেউ মিশো না কিংবা ফটোসেসন করো না…ইত্যাদি।
বোধ না থাকলে মানুষ যা খুশি করতে পারে। কথায় আছে, এক কান কাটলে রাস্তার একপাশে হাঁটে। কোন বিশেষ কারণে দুই কান কাটা গেলে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটে। আমি জানি না, এই সাবেক উচ্চপদস্থ ও কবি রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটা শুরু করলেন কেন? এই প্রবীণ সেলিব্রেটি ও সুশিক্ষিত তার ওজন হিসেবে কথা বলবেন আদর্শিক। তা না করে তিনি হুকুমালি ডাকাতের ভূমিকা কেন অবতীর্ণ হলেন? মহা চিন্তার বিষয়।
নূরিতার স্ট্যাটাসের পর এখন একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে এর স্বরূপ। জানা যায়...নিকট বন্ধুদের অনেকের ইনবক্স তার কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিতে টইটম্বুর। কেউ একজন সৎসাহস নিয়ে দেখিয়েছেন। সেই লেখনীর ভাষা...! আমি মনে করি...নূন্যতম আদর্শলিপি পাঠ করা সেই মাপের কোন শিক্ষিত ব্যক্তি এই অশ্রাব্য ভাষা (তিরিক্ষি মেজাজে হয়ত উচ্চারণ করে ফেলতে পারেন তবে) লিখতে গিয়ে ব্যবহার করতে পারেন না। বিষয়টি আমাকে খুব পীড়া দিয়েছে। স্যরি বন্ধুরা...(অফ দ্য রেকর্ড) বলতে বাধ্য হলাম। এটা একটি কষ্টের কথা। আরো অনেক কথা। ফেবু ভার্চুয়াল জগতের স্ব স্ব অবস্থানে থেকে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকে আমার শ্রদ্ধার পাত্র। তাদের অনেকে জ্ঞান, গড়িমা ও প্রজ্ঞাবয়ে উজ্জ্বল হয়ে আছেন। তাঁদের সাথে শুধু হাঁটলেও অনেক কিছু শেখার থাকে। কিন্তু ওনার মন মতো না হলে সেই সব বরেণ্য ব্যক্তি সম্পর্কে কথা বলেন তীর্যক ভাষায়। আর নারীদের তো....বিশেষ করে নূরিতাসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি সম্পর্কে....তখন তার এই স্বেচ্ছাচারিতা (যা মানুষের সামাজিক ও পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্থ করছে ক্রমাগত) বন্ধের ব্যবস্থা নেয়াটা কী জরুরী নয়...? এত দুঃসাহস উনি কোথায় পেলেন....? আমি নূরিতার প্রতিবাদি স্ট্যাটাসের সাথে সহমত। সেই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করার সুযোগ ছিল না বলে আলাদা করে লিখলাম।
মানুষ তার শ্রদ্ধা হারায় স্বীয় অশ্রদ্ধার কারণে। যে মানুষ প্রতিবাদী মানুষকে সামাজিকভাবে হত্যা করার ফন্দি আঁটে...., হুমকি দেয়....হুকুম দেয়, তাকে বিবেকসচেতন মানুষ হুকুমালি ডাকাতের সঙ্গে তুলনা না করে পারে না। আমি শুধু তুলনা করেই সন্তষ্ট নয়....নূরিতার ভাষায় কণ্ঠ মিলিয়ে এর প্রতিবাদ ও সামাজিক বিচারের দাবী মেনে নিচ্ছি বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে। সেই সাথে নূরিতাকে ধন্যবাদ ....হুকুমালির চরিত্র উন্মোচনের জন্য..........
(ছবি কোন একজন সুহৃদ নুরিতার টাইমলাইন থেকে স্ক্রিণশুট করে পাঠিয়েছেন)
Alamgir Reza Chowdhury
কবি সাদাফ হাসনাইন মানজুর আশির দশক থেকে লেখালেখি শুরু করেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে ‘চর্যাপদ‘ নামক একটি অসাধারণ সাহিত্য পত্রিকার পখচলা শুরু হয়। যা আজো অনিয়মিত প্রকাশ হয়ে আসছে। সাহিত্য পাগল এই মানুষটির সঙ্গে আমার, ভ্রমণ লেখক মঈনুস সুলতান, কবি বদরুল হায়দারের আত্মার সম্পর্ক তখন থেকেই। যা আজো অটুট রয়েছে। জীবন ও জীবিকার কারণে কবি সাদাফ হাসনাইন মানজুর লন্ডনসহ পৃথিবীর বহুদেশে বসবাস গড়েন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও লড়াকু। যা আমি ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। দীর্ঘদিন বিদেশ যাপন শেষে শেকড়ের টানে বাংলাদেশে ফিরে আসে। শুধু কবিতা লিখবে বলেই পাশ্চাত্য পৃথিবীর মোহময় বর্ণাঢ্য জীবন ওকে আটকে রাখতে পারেনি। বাংলাদেশে ফিরে এসে কবিতা নামক কুমারীর পেছনে আবার পথ চলা শুরু করেন। আবার সেই চর্যাপদ। আবার সেই কবিতার আড্ডা। আবার কবিতা-কবিতা বলে চিৎকার-পাগলামি। না কবিতা ওকে ফেলে যায় নি। সে এই চির কুমারীর নীল উর্ণির ঢেউয়ে পাগলপারা। এরই ফলশ্রুতিতে ২০১৪ সালে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতার বই, ‘প্রতিবেশি নদীর মতো।” যা আমিসহ সকল পাঠকের মনকে চমৎকৃত করে। আমি ওকে মনে মনে হিংসা করতে শুরু করি। যাকে বলে কাব্যহিংসা। ওর ফলবান হাত বহতা নদীর মতো বেগবান হোক। এ কামনা আমার সারা জীবন অব্যাহত থাকবে।
সূত্রঃ ভাইরাস নরকীট-১১, Nurita Nusrat Khandoker
বয়স বাড়লে মানুষ মেধা, মনন, বাচনে পরিপক্ক হয়। ষাটোর্ধ হলে হলে হয়ত কায়িক কিছুটা ভাটার টান লাগে, তবে সুদীর্ঘ জীবনের নানান অভিজ্ঞতার আলোকে মেধাটুকু অন্তত শাণিত হয়...যার প্রতিফলন মেধা, মনন, বাচনে প্রতিফলিত হওয়াই বাঞ্চনীয়। সেভাবেই আমরা দেখে অভ্যস্ত।
সম্প্রতি ফেবু সম্রাজ্যে বিভিন্ন বন্ধুজনের ওয়াল থেকে লাইক-কমেন্ট হয়ে বিশাল কলেবরের একটি স্ট্যাটাস অন্য একজন বন্ধুর ওয়ালে তার আগ্রহে দৃষ্টিগ্রাহ্য হলো। আসলে দৃষ্টিগ্রাহ্য বললে বিষয়টিকে হালকা করা হয়....আমার মনে হচ্ছে প্রচন্ডরকম একটা সাইক্লোন, না কি সুনামি উঠেছে...বলাই বাহুল্য। স্ট্যাটাসটি নিজের টাইমলাইনে পোস্ট করেছেন সৃজনশীল বন্ধু Nurita Nusrat Khandoker এবং এর সাথে আলোচিত ব্যক্তিটির লিঙ্ক এ্যড করেছেন বলে সঙ্গত কারণে বিষয়টি স্বাভাবিক গতিতে আমার ওয়ালে উদ্ভাসিত হয়নি। সঙ্গত কারণ মানে, ওই লিংকের ব্যক্তিটির সাথে আমার সংযোগ নেই.. তবে সপ্তাখানেক আগেও ছিল। কোন এক ভর-মজলিসে তার শ্রুতিকটু একখন্ড অর্বাচিন বাক্যালাপের অম্লমধুর প্রতিবাদ করার খেসারত দিয়েছি তার তরফ থেকে আনফ্রেন্ড হয়ে। আর আমার যা স্বভাব....মুহূর্ত সিদ্ধান্তে নিশপিশে আঙ্গুলে কি বোর্ডের ছোঁয়ায় আনন্দচিত্তে আমি করে দিলাম ব্লক। সে যাই হোক...প্রসঙ্গে আসা যাক...তিনি সরকারের একজন সাবেক সচিব বলে শ্রুত। তার দেয়া হিসেব মতে অবসরে (?) গিয়েছেন আরও সাত বৎসর আগে। ফেবু জগতে তার সাথে বছর দুয়েক থেকে এ্যাড থাকলেও সম্মুখ পরিচয় হলো এই প্রজন্মের কতিপয় সৃজনশীল গণমানুষের আড্ডাস্থল MAZAA রেস্তরাঁ-এর আঙ্গিনায় কবি বন্ধু Sadaf Hasnaeen Manzoor-এর সান্নিধ্যে ...যেখানে সৃজনশীল মানুষের মিলনমেলা। না, শুধু পুরুষ ‘মানুষ’ নয়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ‘মানুষ’গণের। সেই আড্ডায় কবিতা হয়, গান হয়, টেলিস্ক্রিপ্ট নিয়ে কথা হয়, সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন হয়....গল্প বলা হয়। মেধাভিত্তিক আলোচনা-সমালোচনা...সবই হয়। আমার সৌভাগ্য... সংস্কৃতির বিভিন্ন অঙ্গনের এই প্রজন্মের বেশ কজন প্রতিভাবানের সাথে পরিচয় হয়েছে সেই আড্ডায়। তারই মাঝে আলোচিত সাবেক সচিব এবং কবি জনাব হুমায়ুন কবির–এর সাথেও পরিচয়। তিনি একদা তার লেখা একটি কাব্য উপহার দিয়েছিলেন আমায়। জানলাম তিনি ‘অর্ণব আশিক’ নামে কবিতাচর্চা করেন। তার কবিতা কিংবা আবৃত্তি শ্রবণের সৌভাগ্য হয়েছিল ‘কাব্যলোকে কাব্যপাঠ’ বর্ষা কবিতা উৎসবে, অতি সম্প্রতি। যেখানে ষড়ঋতুর প্রতি ঋতুতে কবিতা পাঠ হয়, সারা দেশ থেকে প্রেরিত কবিতার মধ্যে পাঁচজন কবিকে সেরা মনোনিত কিংবা বাছাই করে পুরস্ক্রৃত করা হয়। শারদীয়া সম্পাদক ও কবি নুরুল্লাহ মাসুম-এর উদ্যোগ ও সাপ্তাহিক শারদীয়া প্রযোজনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ঋতুর গান, আবৃত্তি, নাটক মঞ্চায়ন হয়। উৎসবে পঞ্চম থেকে একে একে যখন তৃতীয় পুরস্কার ঘোষণা হয়...আমাদের সবার স্নেহভাজন সৃষ্টিশীল কবি ও কণ্ঠশিল্পী Nurita Nusrat Khandoker-এর নাম। পুরো হলসুদ্ধ করতালির মাধ্যেমে আমরা সবাই যে যার মতো উইশ করি এই লক্ষ্মী বোনকে। সবশেষে ঘোষিত আমি যখন প্রথম পুরস্কার গ্রহণ শেষে মঞ্চ থেকে নেমে আসছিলাম, সামনের সারিতে বসা এই আলোচিত সেলিব্রেটি আমার তৃষ্ণার্ত দৃষ্টিতে জাস্ট আড় চোখ তাক করেছিলেন মাত্র। অবশ্য তাতেই আমি খুশি ছিলাম...ধারণা করেছিলাম...ওনার মতো উচ্চপদস্থ একজন গুণী মানুষ একবার নজর ফেলেছে তাতেই আমি ধন্য। এরপর কফির আড্ডা, ফটোসেসন...ধারণা করেছিলাম তিনি হয়ত এই নবীন কাননে আসবেন না...তবে এসেছিলেন...ক্যামেরা হাতে। আর তখনই এমন সেলিব্রেটিকে আবিষ্কার করা শুরু করলাম——নতুন করে। যেটা নূরিতার স্ট্যাটাসে সম্পূর্ণতা পেয়েছে। তাই আর আলাদা করে সে বিষয়ে যাচ্ছি না। তবে আমার এক স্নেহভাজন ফেবু বন্ধু, স্বকীয় কবি ও গল্পকার মুখ গোমড়া করে আমায় অনুরোধ জানালেন, এই মুহূর্তে সে এই ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে চায়। অবশেষে আমার কৌশলী জেরার মূখে জানা গেল——হেতু। জঘন্য...জঘন্য। ক্রমশ জানা গেল আমার এই অনুজের ইনবক্সে অশালিন, শ্রুতিকটু ছন্দের ঢল নামে প্রায়শঃ। সে আমাকে আগেও প্রসঙ্গত জানিয়েছিল...তবে বিশ্বাসের জায়গাটা স্থির রাখতে অমন পদস্থ সেলিব্রেটির বিরুদ্ধাচরণ আমলে নেইনি। কত বড় মাপের মানুষ....হয়ত কোথাও বুঝতে ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে——এমন প্রবোধ চাপিয়ে দিয়ে। তারপর শুনলাম তার ধমকের বহর——‘আমি সাবেক অমুক…..আমার সান্নিধ্যের জন্য কতজন ওয়েটিংয়ে… সবাইকে আমি পাত্তা দেই না। ওদের অঙ্গে রূপ-রস থাকলেই হয় না…কার্যকর গুণ-রসও থাকতে হয়…যা তোমার/আপনার মধ্যে অঢেল….তাই ভাললাগে বলে….তুমি/আপনি বুঝতেই চাচ্ছ না….বোকার হদ্দ…!’ এই হচ্ছে তার স্বাভাবিক এপ্রোচিং….(আমি শুনে বলছি)। এরপর ফোন কল কিংবা ম্যাসেজ বক্স। দাওয়াৎ….গিফট…এ পর্যন্ত না হয় যুক্তির খাতিরে মেনে নেয়া গেল…কিন্তু যে এই অন্যায় আব্দার মেনে নিতে চাইবে না…তখনই শুরু হবে হঠাৎ ভাল লাগা থেকে ছুটে যাওয়া মানুষটার বিরুদ্ধে অপপ্রচার কিংবা বিষোদাগার… অপরের কাছে। ‘আমি সাধু পুরুষ——ও চরিত্রহীন, আমায় এপ্রোচ করেছে। ওর সাথে যেন কেউ মিশো না কিংবা ফটোসেসন করো না…ইত্যাদি।
বোধ না থাকলে মানুষ যা খুশি করতে পারে। কথায় আছে, এক কান কাটলে রাস্তার একপাশে হাঁটে। কোন বিশেষ কারণে দুই কান কাটা গেলে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটে। আমি জানি না, এই সাবেক উচ্চপদস্থ ও কবি রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটা শুরু করলেন কেন? এই প্রবীণ সেলিব্রেটি ও সুশিক্ষিত তার ওজন হিসেবে কথা বলবেন আদর্শিক। তা না করে তিনি হুকুমালি ডাকাতের ভূমিকা কেন অবতীর্ণ হলেন? মহা চিন্তার বিষয়।
নূরিতার স্ট্যাটাসের পর এখন একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে এর স্বরূপ। জানা যায়...নিকট বন্ধুদের অনেকের ইনবক্স তার কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিতে টইটম্বুর। কেউ একজন সৎসাহস নিয়ে দেখিয়েছেন। সেই লেখনীর ভাষা...! আমি মনে করি...নূন্যতম আদর্শলিপি পাঠ করা সেই মাপের কোন শিক্ষিত ব্যক্তি এই অশ্রাব্য ভাষা (তিরিক্ষি মেজাজে হয়ত উচ্চারণ করে ফেলতে পারেন তবে) লিখতে গিয়ে ব্যবহার করতে পারেন না। বিষয়টি আমাকে খুব পীড়া দিয়েছে। স্যরি বন্ধুরা...(অফ দ্য রেকর্ড) বলতে বাধ্য হলাম। এটা একটি কষ্টের কথা। আরো অনেক কথা। ফেবু ভার্চুয়াল জগতের স্ব স্ব অবস্থানে থেকে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকে আমার শ্রদ্ধার পাত্র। তাদের অনেকে জ্ঞান, গড়িমা ও প্রজ্ঞাবয়ে উজ্জ্বল হয়ে আছেন। তাঁদের সাথে শুধু হাঁটলেও অনেক কিছু শেখার থাকে। কিন্তু ওনার মন মতো না হলে সেই সব বরেণ্য ব্যক্তি সম্পর্কে কথা বলেন তীর্যক ভাষায়। আর নারীদের তো....বিশেষ করে নূরিতাসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি সম্পর্কে....তখন তার এই স্বেচ্ছাচারিতা (যা মানুষের সামাজিক ও পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্থ করছে ক্রমাগত) বন্ধের ব্যবস্থা নেয়াটা কী জরুরী নয়...? এত দুঃসাহস উনি কোথায় পেলেন....? আমি নূরিতার প্রতিবাদি স্ট্যাটাসের সাথে সহমত। সেই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করার সুযোগ ছিল না বলে আলাদা করে লিখলাম।
মানুষ তার শ্রদ্ধা হারায় স্বীয় অশ্রদ্ধার কারণে। যে মানুষ প্রতিবাদী মানুষকে সামাজিকভাবে হত্যা করার ফন্দি আঁটে...., হুমকি দেয়....হুকুম দেয়, তাকে বিবেকসচেতন মানুষ হুকুমালি ডাকাতের সঙ্গে তুলনা না করে পারে না। আমি শুধু তুলনা করেই সন্তষ্ট নয়....নূরিতার ভাষায় কণ্ঠ মিলিয়ে এর প্রতিবাদ ও সামাজিক বিচারের দাবী মেনে নিচ্ছি বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে। সেই সাথে নূরিতাকে ধন্যবাদ ....হুকুমালির চরিত্র উন্মোচনের জন্য..........
(ছবি কোন একজন সুহৃদ নুরিতার টাইমলাইন থেকে স্ক্রিণশুট করে পাঠিয়েছেন)
Alamgir Reza Chowdhury
কবি সাদাফ হাসনাইন মানজুর আশির দশক থেকে লেখালেখি শুরু করেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে ‘চর্যাপদ‘ নামক একটি অসাধারণ সাহিত্য পত্রিকার পখচলা শুরু হয়। যা আজো অনিয়মিত প্রকাশ হয়ে আসছে। সাহিত্য পাগল এই মানুষটির সঙ্গে আমার, ভ্রমণ লেখক মঈনুস সুলতান, কবি বদরুল হায়দারের আত্মার সম্পর্ক তখন থেকেই। যা আজো অটুট রয়েছে। জীবন ও জীবিকার কারণে কবি সাদাফ হাসনাইন মানজুর লন্ডনসহ পৃথিবীর বহুদেশে বসবাস গড়েন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও লড়াকু। যা আমি ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। দীর্ঘদিন বিদেশ যাপন শেষে শেকড়ের টানে বাংলাদেশে ফিরে আসে। শুধু কবিতা লিখবে বলেই পাশ্চাত্য পৃথিবীর মোহময় বর্ণাঢ্য জীবন ওকে আটকে রাখতে পারেনি। বাংলাদেশে ফিরে এসে কবিতা নামক কুমারীর পেছনে আবার পথ চলা শুরু করেন। আবার সেই চর্যাপদ। আবার সেই কবিতার আড্ডা। আবার কবিতা-কবিতা বলে চিৎকার-পাগলামি। না কবিতা ওকে ফেলে যায় নি। সে এই চির কুমারীর নীল উর্ণির ঢেউয়ে পাগলপারা। এরই ফলশ্রুতিতে ২০১৪ সালে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রথম কবিতার বই, ‘প্রতিবেশি নদীর মতো।” যা আমিসহ সকল পাঠকের মনকে চমৎকৃত করে। আমি ওকে মনে মনে হিংসা করতে শুরু করি। যাকে বলে কাব্যহিংসা। ওর ফলবান হাত বহতা নদীর মতো বেগবান হোক। এ কামনা আমার সারা জীবন অব্যাহত থাকবে।
সম্প্রতি ফেবুতে হুমায়ূণ কবির (অর্ণব আশিক) নামক এক অধুনালুপ্ত আমলা
(বর্তমান যিনি কবিপ্রার্থী) তিনি সাদাফ হাসনাইন মানজুর সম্পর্কে না জেনেই
অশালীন মন্তব্য করে চলছেন। যা অত্যন্ত অমর্যাদাকর, অসম্মানজনক। মেনে নেওয়া
যায় না। এই ভদ্রলোকটি সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। দীর্ঘ জীবনের কবিতা
যাত্রায় পরিচয়ও হয়ে ওঠে নি। কবি ও কথাসাহিত্যিক দীলতাজ রহমান পরিচয় করিয়ে
দিয়েছিলেন। আমি তাকে নিপাট ভদ্রলোক মনে করেছিলাম। সেই সৌজন্যে ভোরের পাতার
ঈদ সংখ্যায় তাঁর একটি কবিতাও ছেপেছিলাম। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফেবুতে
তাকে ঘিরে যেসব মন্তব্য ও কর্মকাণ্ড চোখে পরছে। এতে আমি সঙ্কিত। একজন
কবিতাকর্মী কি করে এতটা নোংরা ও ঈর্ষা পরায়ন হতে পারে! বিষয়টি নিয়ে আমার
অবাক হওয়া ছাড়া কিছু করবার নেই। হূমায়ূন কবির সাহেব জানে না কবিতার মতো
কিছু একটা লিখলেই কবি হওয়া সম্ভব নয়। অক্টোভিও পাজ বলেছেন, কবিতার জন্য এক
জীবন অপেক্ষা করতে হয়। আপনি অতটা সময় কবিতার জন্য দিতে চেষ্টা করুন। নইলে
অযথা সাহিত্যের পরিবেশ দূষণ করবেন না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন